নোয়াখালীর প্রধান ডাকঘরের ৫৪টি ইলেকট্রনিকস মানি অর্ডার (ইএমও) মেসেজ জালিয়াতির মাধ্যমে ২৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে ডাক বিভাগের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড করেছেন দুদকের স্পেশাল জজ আদালত।

বুধবার (৮ জুন) দুপুরে নোয়াখালী স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এএসএম মোরশেদ খান এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন নোয়াখালীর প্রধান ডাকঘরের কাউন্টার অপারেটর রীনা রানী মজুমদার, সহকারী পোস্টমাস্টার মো. মুনির চৌধুরী শহিদ ও ডিপিএমজি কার্যালয়ের পোস্টাল অপারেটর আনোয়ার হোসেন।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেলা দুদকের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম।

দুদক জেলা কার্যালয়ের তথ্যমতে, দণ্ডপ্রাপ্ত ডাক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মরত অবস্থায় ২০১৩ সালের ১৩ জুন থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে যোগসাজশের মাধ্যমে ৫৪টি ইলেকট্রনিকস মানি অর্ডার জালিয়াতির মাধ্যমে ২৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় ওই বছরের ১৩ অক্টোবর সুধারাম মডেল থানায় মামলা করেন পোস্টমাস্টার এস এম সহিদ উল্যাহ। 

পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য থানা থেকে দুদক প্রধান কার্যালয়ের তৎকালীন উপপরিচালক নাছির উদ্দিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে এই কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

রায়ে আসামি রীনা রানী মজুমদার ও আনোয়ার হোসেনকে একটি ধারায় পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড ও ১৬ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড; আরেকটি ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

অপর আসামি মুনীর চৌধুরী শহিদকে একটি ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড; আরেকটি ধারায় এক বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

এ ছাড়া প্রত্যেক আসামিকে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় আরও দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে প্রদত্ত সাজা যুগপৎভাবে কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম বলেন, রায় ঘোষণার সময় আসামি মুনীর চৌধুরী শহিদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো এবং বাকি পলাতক দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।

তিনি আরও বলেন, এ মামলার রায়ে কারাদণ্ড পাওয়া গ্রেপ্তার আসামির হাজতবাসকালীন থেকে বাদ যাবে। পলাতক আসামিরা যেদিন আত্মসমর্পণ করবেন বা পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হবেন, সেদিন থেকে তাদের সাজা কার্যকর হবে।

হাসিব আল আমিন/এনএ