রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুরে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুতে প্রায় সাড়ে তিন মাস পর আলো ফিরতে শুরু করেছে। গত ৪ জুন থেকে সেতুর ল্যাম্পপোস্টের নষ্ট বাতিগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এখন সন্ধ্যা নামতেই সেতুর ওপর পড়ছে ল্যাম্পপোস্টের আলো। তবে এখনো কিছু বাতি নষ্ট হয়ে আছে। এগুলো দ্রুত সংস্কার বা পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

দীর্ঘদিন ধরে সেতুর ৩২টি ল্যাম্পপোস্ট অকেজো ছিল। গত ৩ জুন জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে ‌‘অন্ধকারে শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু, বাড়ছে দুর্ঘটনা-অপরাধ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরদিন থেকে ল্যাম্পপোস্টের নষ্ট বাতিগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হয়। 

সেতুটি দীর্ঘদিন পর আলোকিত হওয়ায় বিভিন্ন পরিবহনের চালক ও যাত্রী সাধারণসহ স্থানীয়রা স্বস্তি প্রকাশ করছে। এখন দিনের আলো ফুরিয়ে গেলেও সেতুর বাতির নিচের আলোয় সাধারণ দর্শনার্থী ও ভ্রমণপিপাসুরা অনেকটা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবেন।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বাতিগুলো নষ্ট হয়ে ছিল। এতে রাতে সেতু দিয়ে চলতে গিয়ে বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে অন্ধকারে বহিরাগতদের অনেকেই মাদকসেবন ও মাদক পরিবহনসহ নানা অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এখন সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বাতিগুলো মেরামত ও নতুন বাতি লাগানোর কারণে সন্ধ্যায় সেতুটি আগের মতো আলোকিত হয়েছে।

এই সেতু দিয়ে নিয়মিত রংপুর যাতায়াত করেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ব্যবসায়ী নিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, সেতুটি তিন মাসেরও বেশি সময় অন্ধকারে ছিল। ল্যাম্পপোস্টের বাতিগুলো নষ্ট হওয়াতে আমার মতো শত শত মানুষ ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করেছে। তবে কয়েকদিন আগে অন্তত ১৫-১৭টি বাতি সংস্কার করতে দেখেছি। সন্ধ্যার পর সেতুতে কিছু বাতি জ্বলছে। তবে এখনো পুরোপুরি নষ্ট বাতিগুলো মেরামত শেষ হয়নি। সবগুলো বাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা করলে পুরো সেতু আলোকিত হবে।

লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদি জানান, কয়েক দিন আগে খবর প্রকাশের পর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয়ের লোকজন এসে সেতুর কিছু বাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা করেছেন। বাকি নষ্ট বাতিগুলো জ্বালানো সম্ভব হয়নি।

উপজেলা প্রকৌশলী মজিদুল ইসলাম বলেন, আমরা কিছু দিন আগে সেতুর বাতিগুলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করেছি। কিছু বাতি নষ্ট হওয়ায় জ্বালানো সম্ভব হয়নি। নষ্ট বাতিগুলো সংস্কার করার জন্য আমরা খরচের হিসাব তৈরি করে ঢাকা অফিসে পাঠিয়েছি। বাজেট এলেই বাতিগুলো ঠিক করা হবে।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ উদ্দীন বলেন, সেতুতে বাতি জ্বলতে শুরু করেছে। আশা করছি বাকি কয়েকটি ল্যাম্পপোস্টের বাতিও দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার বা পরিবর্তন করে নতুন বাতি স্থাপন করা হবে। সেতু আলোকিত রাখার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর