ফরিদপুরের কানাইপুর বাজার এলাকায় মহাসড়কের পাশে থাকা ৮০টি পাকা, সেমি পাকা ও টিনের অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে সড়ক বিভাগ। বৃহস্পতিবার(৯ জুন)  সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত  এক্সকাভেটর দিয়ে সদর উপজেলার কানাইপুর বাজার সংলগ্ন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের উত্তর পাশে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।

বৃষ্টির মধ্যে পরিচালিত এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের খুলনা জোনের সম্পত্তি ও আইন কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনিন্দিতা রায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযানকালে সড়ক বিভাগের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কানাইপুর জামে মসজিদ মার্কেটের দুই তলা বিশিষ্ট ভবনের ওপরে ও নিচে মোট ২৮টি দোকান ভেঙে দেওয়া হয়। এছাড়া সড়কের একই পাশে সেমি পাকা ঘর, টিনের ঘর, ছাপড়া ঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

এ সময় ব্যবসায়ীদের মধ্যে হুলুস্থুল পড়ে যায়। অনেক ব্যবসায়ী মালপত্র সরানোর সময়ও পাননি। সেখানে এক অবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনেক ব্যবসায়ীকে উচ্চস্বরে কান্না করতে দেখা যায়।

কানাইপুর জামে মসজিদ কমিটির সদস্য মকবুল হোসেন বলেন, আমাদের মার্কেট আমাদের কেনা জায়গায় নির্মাণ করা হয়। সড়ক বিভাগ সেই জায়গা নিজেদের দাবি করে দোতলা মার্কেটের ১৪টি দোকান গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, স্থাপনা না ভাঙার জন্য গতকাল বুধবার (৮ জুন) বিকেলে ব্যবসায়ীরা কানাইপুরে মহাসড়কের পাশে মানববন্ধন করেছেন। মানবিক আবেদন জানানো হয়েছে। রাস্তার দুই পাশ সমান হারে বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু আমাদের কোনো কথা সড়ক বিভাগ কর্ণপাত করেনি। আমাদের দুই তলা মার্কেটের ১৪টি দোকান ভাঙা পড়েছে।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত প্রায় এক মাস ধরে ওই অবৈধ স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের বলা হচ্ছিল। স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। গণবিজ্ঞপ্তি ও সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ মাইকিং করা হয়েছে। মাইকিং করে বুধবারের মধ্যে সকল অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

ফরিদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইমরান ফারহান বলেন, কানাইপুর বাজারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনিন্দিতা রায়। এ অভিযানে ৭৫ থেকে ৮০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রায় এক একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এ জমির বাজার মূল্য ১০ কোটি টাকা। 

এ উদ্যোগের প্রশংসা করে কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, সরকার তার নিজস্ব জায়গা উদ্ধার করেছে এটা একটি ভালো দিক। দীর্ঘদিন পরে হলেও সরকার এটি উপলব্ধি করেছে। সাধারণ জনগণ এ কাজে সন্তুষ্ট। যারা এতদিন সরকারি জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে টাকা আয় করছিলেন, তাদের উচিত ছিল সরকারের নির্দেশ মেনে দোকানগুলো সরিয়ে নেওয়া। ব্যবসায়ীরা ভাড়া নিয়েছেন। যে দখলদাররা সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন, তাদের উচিত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

জহির হোসেন/আরএআর