কিশোরগঞ্জের ইটনা হাওরে নৌকাডুবিতে পরিবারে দুই সদস্যকে হারিয়ে বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ।

সোমবার (১৩ জুন) ইটনার বড়িবাড়ি ইউনিয়নের এনশহিলা হাওরে পাঁচজন নিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ডুবে যায়। এতে জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ ইউনিয়নের উত্তর হালগড়া গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে মো. সিরাজ উদ্দিন (৬০) ও তার ছোট ছেলে মো. ওয়াসিম মিয়া (৩৫) নিহত হয়।

সরেজমিনে করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ ইউনিয়নের উত্তর হালগড়া গ্রামে দেখা যায়, স্বামী ও ছোট ছেলেকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন আবেদা আক্তার। জ্ঞান হারাচ্ছেন বার বার। স্বামীকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছেন স্ত্রী রোনা আক্তার। আহাজারি করে বলছেন, আমার ছেলে-মেয়ে দুটি এতিম হয়ে গেল।

সিরাজ উদ্দিনের ছোট ভাই জামাল উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বড় ভাই ও ভাতিজার মৃত্যুতে পরিবারটি শেষ হয়ে গেল। এখন সরকারি কোনো সহযোগিতা না পেলে তার চলতে পারবে না।

ওয়াসিমের চাচাতো ভাই মো. শরীফ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাবা-ছেলের এক সঙ্গে মৃত্যুর ঘটনা আমাদের এলাকায় এর আগে কখনো ঘটেনি। এমন ঘটনায় প্রতিবেশীসহ এলাকাবাসী শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে। 

কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. আবুজর গিফারী জানান, ইটনা বড়িবাড়ি ইউনিয়নের এনশহিলার হাওরে নৌকাডুবির এমন ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের চার সদস্যের একটি ডুবুরি দল বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে যায়। ডুবুরি দল রাত ৮টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়েও তাদের কোনো খোঁজ পায়নি। রাত হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার অভিযান বন্ধ করে ফিরে যায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় উদ্ধার অভিযান শুরু করলে ৯টার দিকে ডুবে যাওয়া নৌকার ভেতর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ কুমার বসু ঢাকা পোস্টকে বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে একটি রিপোর্ট আসলে ওই পরিবারকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে।

এসপি