ভালোবেসে কোর্ট ম্যারেজ করেন মাসুদ-সুমাইয়া। তবে তাদের বিয়ে মেনে নেয়নি পরিবারের কেউ। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বিয়ের মাত্র ৩৮ দিন পর শ্বশুরবাড়ির সামনে নৌকা ডুবে মারা যায় মাসুদ। সোমবার (১৩ জুন) দুপুরে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার বড়িবাড়ি ইউনিয়নের এনশহিলার হাওরে এ ঘটনা ঘটে।    

মাসুদ রানা কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দামিহা শহিলাহাটি এলাকার মো. মোস্তফার বড় ছেলে।

সরেজমিনে মাসুদ রানার বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, হাওরে পানি হওয়ায় মাসুদ দৈনিক মজুরিতে নৌকায় কাজ করতেন। প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে তাড়াইল উপজেলার দামিহা থেকে গাছের ডালপালা নিয়ে ইটনা সদর ইউনিয়নের বেতেগা হাওরে যাচ্ছিলেন। তার সঙ্গে সিরাজ উদ্দিন ও তার ছেলে ওয়াসিমও ছিল। পথে ইটনার বড়িবাড়ি ইউনিয়নের এনশহিলার তার শ্বশুরবাড়ির সামনের হাওরে পৌঁছলে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। 

এ সময় ঝড়ে নৌকাটি উল্টে যায়। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় মাসুদসহ পাঁচজন ছিল। দুজন সাঁতরে মাছ ধরার নৌকায় উঠলেও মাসুদ রানা, সিরাজ উদ্দিন এবং তার মেজ ছেলে ওয়াসিম মারা যায়। 

নৌকাডুবি থেকে বেঁচে ফেরা নাজমুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাসুদ সহজ-সরল, খুব ভালো ছেলে ছিল। সে আমার সঙ্গে নৌকায় কাজ করত। প্রতিদিনের মতো সোমবারও সে আমার সঙ্গে কাজ করতে নৌকায় যায়। হাওরে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটলে আমি ও নৌকার মাঝি কোনোমতে সাঁতরে মাছ ধরার নৌকায় উঠলে মাসুদসহ তিনজন নিখোঁজ হয়।মঙ্গলবার ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল তাদের মরদেহ উদ্ধার করে। 

মাসুদ রানার বাড়িতে গিয়ে তার বাবার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার দুই ভগ্নিপতি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে বাধা দেন। 

মাসুদ রানার শাশুড়ি সাবিনা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিয়ের পর স্বামীসহ  সুমাইয়াকে একদিনও আমাদের বাড়িতে আসতে দেয়নি মাসুদের পরিবার। এমনকি আজ মাসুদের মরদেহ নিতে এসে তার দুই ভগ্নিপতি খারাপ ব্যবহার করেছে। 

কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আবুজর গিফারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, নৌকাডুবিতে মাসুদ রানাসহ নিখোঁজ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এসকে রাসেল/এসপি