কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপর স্থিতিশীল থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানি স্থায়ী হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে বানভাসি মানুষদের। এ অবস্থায় সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ঘর-বাড়ি ও নৌকায় অবস্থান করা মানুষজন।

বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবারের সংকটে পড়েছেন তারা। বন্যাকবলিত এলাকায় তীব্র হয়ে উঠছে গবাদি পশুর খাদ্য সংকট। 

মঙ্গলবার (২১ জুন) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা যায়, ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ত্রাণসহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করছেন অনেকেই।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর গ্রামের রহিমা বেগম জানান, চুলা জ্বালাতে পারছি না। ঘরের সবকিছুই তলিয়ে আছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। 

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা হোসেন আলী বলেন, বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে থাকায় নিজেদের কষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া গরু ছাগলের খাবারও জোগাড় করতে পারছি না।

সদরের ধরলা সেতু এলাকার সওদাগর পাড়ার বেড়ি বাঁধ সংলগ্ন বন্যা কবলিত মানুষরা অভিযোগ করেন, কয়েকদিন ধরে পানিবন্দি দিন যাপন করলেও এখনো কোনো ত্রাণসহায়তা পাননি তারা।

জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, ৯ উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৩শ ৩৮ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার গো-খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন জানান, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপর কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

জুয়েল রানা/আরআই