চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলিতে দুলাল হোসেন (৩৩) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছে। নিহত দুলাল পাঁকা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দশরশিয়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে। বুধবার (২২ জুন) রাত ৩টার দিকে দুই সীমান্তের ভারতীয় অংশে দুলাল নিহত হয়। 

স্থানীয় বাসিন্দা, দুলালের স্ত্রী-স্বজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নিহত দুলালের মরদেহ পড়ে ছিল। সীমান্ত লাইন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ভেতরে ভারতের অভ্যন্তরে পশ্চিমবঙ্গের সুতি থানার চাঁদনীচক এলাকার মাঠের ভেতরে মরদেহ পড়ে রয়েছে। 

নিহত দুলালের স্ত্রী শাহিদা খাতুন ঢাকা পোস্টকে জানান, আমার স্বামী মঙ্গলবার (২১ জুন) সন্ধ্যার পর কয়েকজনের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে শুনেছি, গভীর রাতে সীমান্তে গুলির শব্দ পেয়েছে গ্রামবাসী। সকালে জানতে পারি, বিএসএফের চাঁদনীচক ফাঁড়ির জোয়ানদের গুলিতে আমার স্বামী মারা গেছেন। ভারতের এক কিলোমিটার ভেতরে তার লাশ রয়েছে।

নিহত দুলালের আত্বীয় তরিকুল ইসলাম বলেন, এলাকার মানুষ ও আত্মীয়স্বজনরা বুধবার সকালে বিজিবির ওয়াহেদপুর কোম্পানি ফাঁড়িতে গিয়ে খবর দেয়। আমরা দুলালের মরদেহ ফিরিয়ে আনার অনুরোধ করি বিজিবির কাছে। পরে বিজিবির ওয়াহেদপুর কোম্পানি ফাঁড়ির একটি দল দুলালের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন। 

স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম জানান, নিহত দুলালের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় আরও দুই ব্যক্তি তার সাথে গেছিলেন। তারা ফিরে আসলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। 

পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আমার সভা ছিল। এর মধ্যে দুলালের আত্মীয়-স্বজনরা বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। এখনো (বুধবার বিকেল ৪টা) মরদেহ ফেরত পাওয়া যায়নি। 

তবে পাঁকার ওয়াহেদপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে কোনো বাংলাদেশির হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর শাহেদ। মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, সীমান্তে কোনো বাংলাদেশি হতাহতের খবর পায়নি। তবে এক ব্যক্তির পরিবার তাদের স্বজন নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি আমাদেরকে জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত নয়।

জাহাঙ্গীর আলম/আরআই