ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে সিলেট নগরীর বন্যার পানি। নগরীর সবচেয়ে বেশি বন্যা কবলিত এলাকা সিলেট উপ-শহর। এই এলাকার বেশিরভাগ গলির রাস্তা এখনো তলিয়ে আছে। জেগেছে মাত্র কয়েকটি ব্লক। 

এছাড়া টানা রোদে তেররতন, সোবহানীঘাট, যতরপুর, মিরাবাজার, জামতলা, তালতলা, শেখঘাট, বেতের বাজার, ঘাসিটুলা, কুয়ারপাড়, লালাদিঘীর পাড়, মির্জাজাঙ্গাল এলাকার পানি দ্রুত শুকাচ্ছে। একই সঙ্গে নগরে ছড়াচ্ছে ময়লা আবর্জনা ও পচা দুর্গন্ধ।

নগরের কুয়ারপার এলাকার বাসিন্দা কামরুন নাহার বলেন, পানি কালচে রঙ ধারণ করেছে। এই পানি থেকে মারাত্মক দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। ঘর ধোয়ামোছার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি গত দুইদিন থেকে, কিন্তু কোনোমতেই যেন ঘর ও আশপাশের দুর্গন্ধ কমছে না।

এদিকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেই যে যার কাজে ফেরার চেষ্টা করছেন অনেকে। কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন বন্যার ক্ষয়ক্ষতি। দিনমজুর আলী আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত এক সপ্তাহ নগরীর একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম, সেখানে অনেকেই রান্না করা খাবার এবং শুকনা খাবার দিয়েছিল। সেখানে অনেকেই রান্না করা খাবার ও শুকনো খাবার দিয়েছিল।এখন বাসায় ফিরেছি। তাই কাজে বেরিয়েছি। এই বন্যার ভয়াবহতা ভুলে জীবনকে আগের মতো স্বাভাবিক করতে চাই।

যাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা মেরামত শুরু করেছেন। বলছেন, তাদের এই মুহূর্তে বিপদ কাটিয়ে ওঠার আর্থিক সহায়তা দরকার ছিল। সিলেট নগরীর লালদীঘির পারের বাসিন্দা নুরউদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, কী একটা ভয়াবহ সময় কাটিয়েছি তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। জীবনে কত বন্যা দেখেছি কিন্তু এ রকম বন্যা আগে কখনো দেখিনি। হঠাৎ করে বন্যার পানি তছনছ করে দিয়েছে আমাদের স্বাভাবিক জীবন। আসবাবপত্র থেকে শুরু করে অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। গত পরশু আমার ঘর থেকে পানি নেমেছে। এখন ঘর মেরামতের চেষ্টা করছি। দিন আনি দিন খাই। আমার পক্ষে পুরোপুরি মেরামত করা সম্ভব নয়। এজন্য তিনি জেলা প্রশাসন ও বিত্তবানদের সহায়তা ও কামনা করেন।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ জানান, নদ-নদীর পানি কমছে খুবই ধীরগতিতে। বেশ কয়েকটি নদীর কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদীগুলোর পানি অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে বিপৎসীমার নিচে নেমে আসবে।

মাসুদ আহমদ রনি/আরএআর