ঢাকা থেকে আসা যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন

পদ্মা সেতুতে টোল দিয়ে যানবাহন পারাপার শুরু হয়েছে। রোববার (২৬ জুন) সকালে উৎসবমুখর পরিবেশে সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকার ফুলবাড়িয়া বিআরটিসি বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে বিআরটিসির আটটি বাস ছেড়ে আসে। 

বেলা ১১টার দিকে বিআরটিসি বাস শরীয়তপুর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে সেখানে শরীয়তপুর আন্তঃজেলা বাস মালিক গ্রুপ ও আন্তঃজেলা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে বাসগুলো আটকে রাখা হয়। এতে করে ঢাকা থেকে আসা যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পদ্মা ট্রাভেলসের বাস শরীয়তপুর থেকে যাওয়ার পথে আটকে দেওয়া হয়।

বাস মালিক গ্রুপ ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বলছেন- সমন্বয়হীনভাবে জেলা শহরে বিআরটিসি ও পদ্মা ট্রাভেলসের বাস ঢুকে পড়ায় এই সমস্যা হয়েছে।

বিআরটিসির ডিপো ম্যানেজার (অপারেশন) মো. জুলফিকার আলী স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে বলা হয়, গত ২৫ জুন পত্র প্রেরণের মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক, শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের অবগত করা হয় যে, তারা যেন ঢাকা-টু-শরীয়তপুর (গোসাইরহাট) ভায়া মাওয়া, বুড়িরহাট, তিনখাম্বা রুটে এসি বাস সার্ভিস চলাচলে সহোযোগিতা করেন। 

বিআরটিসির চালক, যাত্রী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার সকাল ৯টায় প্রথম বাস ফুলবাড়ি স্ট্যান্ড থেকে শরীয়তপুরের গোসাইরহাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। এরপর আরও ৮টি বিআরটিসির বাস ছেড়ে আসে। দুপুরের দিকে সেই বাসগুলো শরীয়তপুর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছায়। সেখানে বিআরটিসি বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেন শরীয়তপুরের বাস শ্রমিকরা। পরে বাসগুলো জেলা বাস মালিক ও শ্রমিকদের হেফাজতে নেওয়া হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরটিসির এক চালক বলেন, সকালে ছেড়ে দুপুরে শরীয়তপুরে বাস আসলে শরীয়তপুর জেলা বাস মালিক ও শ্রমিক নেতারা প্রথমে থামান। তারা বাসের যাত্রীদের নামিয়ে দেন। পরে তারা বাসগুলো সাইড করে রাখেন। 

গোসাইরহাটগামী শিহাব উদ্দিন বলেন, ঢাকা থেকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে নিজ এলাকায় যাব। কিন্তু তা হলো না। পথেই আটকে দিল বাস। এখন বাধ্য হয়ে অন্য গাড়িতে যেতে হবে।

পদ্মা ট্রাভেলসের পরিচালক অ্যাডভোকেটে আবুল কালাম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল থেকেই পদ্মা ট্রাভেলস বাস আটকে রাখে বাস মালিক ও শ্রমিকরা। তারা বলছে আমাদেরকে তাদের সঙ্গে মিলে কাজ করতে। আমরা সরকারি নিয়মে যা আছে তা মেনে চলব। আগামীকাল ডিসি অফিসে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক আছে। 

শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস লিমিটেডের পরিচালক আব্দুল খালেক পালোয়ান বলেন, আন্তঃজেলা বাস মালিক গ্রুপের পক্ষ থেকে ঢাকা-শরীয়তপুর রুটে আজ থেকে যাত্রীসেবা চালু করেছি। শরীয়তপুর থেকে ১৭টি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। যদি এখন বিআরটিসি বাস শরীয়তপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে যাত্রী নিয়ে আসে তাহলে আমাদের লোকাল বাস অচল হয়ে যাবে। এছাড়া বিআরটিসি বাস আমাদের সঙ্গে কথা না বলেই জেলায় ঢুকে পড়েছে। তাই সেগুলো সাইড করে রাখা হয়েছে।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান বলেন, এই বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সমস্যাটি সমাধানের জন্য চেষ্টা চলছে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর