ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামে পদ্মা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করলেও ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না।

এদিকে নতুন করে ভাঙন দেখা দেওয়ায় গত দুই দিনে (শনি ও রোববার) অন্তত ১০ মিটার প্রস্থ ও আরও ২০ মিটার তীর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২০ জুন) বিকেল ৪টা থেকে মঙ্গলবার (২১ জুন) সকাল ৭টা পর্যন্ত ওই এলাকায় ভাঙনের ফলে ১২ মিটার নদীর তীর বিলীন হয়ে যায়। মঙ্গলবার (২১ জুন) থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড পুনরায় ভাঙনরোধে কাজ শুরু করে।

গত বছরও নদীর ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছিল। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছিল। চলতি বছর বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার জায়গায় নতুন করে আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সোমবার (২০ জুন) থেকে রোববার (২৬ জুন) পর্যন্ত নদীপাড়ের ৩২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০ মিটার প্রস্থে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।

ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড বার্লুভর্তি যে জিও ব্যাগ ফেলছে, তার প্রতিটি বস্তার ওজন ১৭৫ কেজি হওয়ার কথা। কিন্তু কোনো মাপ ছাড়াই গামলা দিয়ে বালু ভরে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। অনেক সময় সেলাই করা ছাড়াই বস্তা ফেলতে দেখা যায়।

তারা জানান, ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ দায়সারা গোছের হচ্ছে। ভাঙনরোধের এ ব্যবস্থা কোনো কাজে আসছে না। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে এলাকার সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এছাড়া বাড়ি ঘর-বিলীন হবে অন্তত ৫০ পরিবারের।

চর হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহঙ্গীর কবির বলেন, আমি রোববার ভাঙনকবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। এ সময় দেখা যায়, কম বালু ও মুখ সেলাই ছাড়া জিও ব্যাগ নদীর পাড়ে ফেলা হচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরে আনা হয়েছে।

চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কাউসার বলেন, ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজে আমি নিজেও সন্তুষ্ট নই। বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানাব। তিনি বলেন, গত বছর যে এলাকায় ভাঙনরোধে কাজ হয়েছে, চলতি বছর সে এলাকায় নতুন করে ভাঙনে প্রমাণ করে, গতবারের কাজের মান ভালো ছিল না।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্য সহকারী মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ভাঙনকবলিত ওই এলাকায় ৫০টি জিও টিউব ও ১ হাজার ২৮০টি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।

ওই কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৗশলী আলতাফ হোসেন বলেন, কাজের মান খুব ভালো হচ্ছে। সব বস্তা তো পরিমাপ করা সম্ভব না, তবে বস্তায় যে পরিমাণ বালু ধরা আছে, তার থেকে বেশি পরিমাণে দেওয়া হচ্ছে। সেলাই ছাড়া জিও ব্যাগের ব্যাপারে তিনি বলেন, একটু সমস্যা হতেই পারে। সবাইকে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ তদারকি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জহির হোসেন/এসপি