নিহত লাইলী আক্তারের শাশুড়ির আহাজারি

ময়মনসিংহে প্রেমিকযুগলের পালিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে ছেলের মা লাইলী আক্তারকে (৩৮) আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে মেয়ের মাসহ পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকালে নগরীর চর ঈশ্বরদিয়া মধ্যপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাতে এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। 

নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে পাশের বাড়ির খোকন মিয়ার মেয়ে খুকির। প্রেমের টানে গত রোববার (২৬ জুন) বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সিরাজুল ও খুকি। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়। সেই বিবাদের জেরে মঙ্গলবার সকালে সিরাজুলের মা লাইলী আক্তারকে বাড়িতে একা পেয়ে মারধর করে একটি কক্ষে আটকে আগুনে ঝলসে দেয় খুকির মা কনাসহ কয়েকজন। 

পরে বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা লাইলীকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে তাকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার্ড করা হয়। সেখানে সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

নিহত লাইলী আক্তারের স্বামী আব্দুর রশিদ বলেন, আমার প্রতিবেশী খোকন মিয়ার মেয়ে খুকির বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। তবে আমার ছেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত রোববার আমার ছেলের সঙ্গে খুকি পালিয়ে যায়। বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তুতি চলছিল। আগামীকাল বুধবার তাদেরকে এনে দুই পরিবার বসে মীমাংসার কথা ছিল। 

তিনি আরও বলেন, আজ সকাল ৮টার দিকে আমি কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলে মেয়ের মা কনা, চাচি নাসরিন, আসমা ও রুমাসহ আরও কয়েকজন বাড়িতে এসে আমার স্ত্রীকে হাত পা বেঁধে মারধর করে এবং একটি ঘরে নিয়ে পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে বাড়িতে ফিরে গুরুতর আহত অবস্থায় লাইলীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করেন। সন্ধ্যার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লাইলীর মৃত্যু হয়। 

ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, এ ঘটনায় নিহতের স্বামী বাদী হয়ে  আটজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মরদেহ ঢাকা থেকে আনার প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে আটক করা হয়েছে। দোষীদের ধরতে অভিযান চলছে।

উবায়দুল হক/আরএআর