কুড়িগ্রামে বন্যার রেশ কাটতে না কাটতে আবারও ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রসহ সব কটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দুদিন আগে শঙ্কায় আঁতকে উঠছে নদীতীরবর্তী মানুষ।

এদিকে টানা ১২ দিন পানিবন্দি অবস্থা থেকে কিছুটা নিস্তার পেয়ে আশ্রয়ের জন্য ঘরবাড়ি মেরামতের কাজ শুরু করেছে, তখনই আবার বন্যার পূর্বাভাসে বিচলিত হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলবাসী। এ ছাড়া কৃষি ও মৎস্য খাতে অপরিসীম ক্ষতির মুখে পড়া কৃষকদের চোখে শঙ্আ ও হতাশা ভর করেছে।

বুধবার (২৯ জুন) বিকেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ ঘণ্টায় ১৬ সেন্টিমিটার পানিবৃদ্ধি পেয়ে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমা ১ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৬৭ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৪৯ সেন্টিমিটার ও তিস্তার পানি ২০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ২৩ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তবে ধরলার পানি শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেকোনো সময় ধরলার পানি সদর পয়েন্ট বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

জেলার সব কটি নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেও বড় ধরনের বন্যার সৃষ্টির আশঙ্কা না থাকলেও নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ আবারও দুর্ভোগে পড়তে পারে।

সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের চর আরাজী কদমতলা গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে বন্যার কবলে পড়ে আমার ঘরবাড়ি ও পটলের ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পটলের খেত ভেঙে বীজতলা করেছি, সেটিও বুঝি আর থাকবে না। যে হারে ধরলার পানি বাড়ছে, গত বন্যার চেয়ে বড় ধরনের বন্যা হতে পারে।

সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর এলাকার আলী হোসেন বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি থেকে একটু রক্ষা পেলাম। আবারও নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এবার যে কী হবে আল্লাহ জানেন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রসহ সব কটি নদীর পানি বাড়ছে। এতে এসব নদ-নদীতীরবর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা এই নদীগুলোর পানি বাড়তে পারে বলে আমরা বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানতে পেরেছি।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য যথেষ্ট ত্রাণব্যবস্থা রয়েছে। বানভাসি মানুষের প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি রয়েছে।

মো. জুয়েল রানা/এনএ