গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে পঞ্চাগড়ের গুচ্ছগ্রামে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। ঘরের মেঝে পর্যন্ত পানি ওঠায় পানিবন্দি হয়ে রাত-দিন অতিবাহিত করছে গুচ্ছগ্রামের প্রায় ৫০টি পরিবার। যার ফলে চলাফেরাসহ খাবার সংকটে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা।

বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের সাবেক গাড়াতি ছিটমহলের গুচ্ছগ্রামে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গুচ্ছগ্রামটি নিচু জমিতে হওয়ায় এবং দ্রুত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

কথা হয় গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, দুইদিন থেকে তাদের চুলোয় আগুন জ্বলেনি। ফলে না খেয়েই দিন পার করতে হচ্ছে তার চার সদস্যের পরিবারের। পানি দ্রুত নিষ্কাশন না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

একই কথা বলেন এনায়েত উল্লাহ এবং আব্দুল খালেক। তারা বলেন, গুচ্ছগ্রামে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে প্রতি বছরই বর্ষাকালে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়। পুরো গুচ্ছগ্রামটি নিচু জমিতে হওয়ায় তাদের চলাচলের রাস্তার ওপর দিয়ে পানির স্রোত যায়। স্রোতের সঙ্গে ভেসে যাচ্ছে সড়কে দেওয়া বালু মাটি।  

আমিনুল ইসলাম নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, গত চার বছর ধরে বর্ষা এলেই আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এখানে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে যেন আমাদের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে।

মেম্বার-চেয়ারম্যানদের কাছে গিয়েও আমরা কোনো সহযোগিতা পাই না। সরকার আমাদের ভালোর জন্য এখানে আশ্রয় দিয়েছেন, আমরা ভালোভাবেই এখানে থাকতে চাই। আমাদের এই সমস্যাটা দ্রুত সমাধান করার জন্য অফিসের কর্মকর্তাদের প্রতি জোর দাবি জানাই। 

পঞ্চালয় গুচ্ছগ্রামের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময়ের পর সরকার এই গুচ্ছগ্রামটি করে দেয়। গত চার বছর ধরে ৫০টি পরিবার এখানে বসবাস করছে। সারাবছর গুচ্ছগ্রামটি স্বাভাবিক থাকলেও বর্ষা মৌসুমে এখানকার বাসিন্দাদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। পানি নিষ্কাশনের জন্য পরিকল্পিত কালভার্ট এবং সড়কে মাটি ভরাট করে উঁচু করা গেলে এই সংকট কেটে যেত। 

এ বিষয়ে জানতে হাফিজাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল হক বলেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর সার্বিক খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের সমস্যা নিরসনে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

আরএআর