কুকুরের জন্য কাঁদছেন পারুল

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার বেলগাছিতে বিষ প্রয়োগে পাঁচটি কুকুরকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মাসুম (৩০) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে শহরের বেলগাছি গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কুকুরগুলোর লালনপালনকারী পারুল নামে এক নারীকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। অভিযুক্ত মাসুম  একই এলাকার আলী কদরের ছেলে। 

পারুলসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মাসুমের বাড়িতে মুরগি মেরে ফেলে একটি কুকুর। এরই জের ধরে বুধবার দুপুরে বাড়ির সামনে বাটিতে ভাতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে ছয়টি কুকুরকে খেতে দেন তিনি। এরপরই একে একে পাঁচটি কুকুরের মৃত্যু হয়। আমরা নিষেধ করা সত্ত্বেও মাসুম আমাদের কথা শোনেননি। মাসুম বলেন, জেল হলে হোক তাতে কোনো সমস্যা নেই। সব কুকুরকে মেরে ফেলব।

পরিবেশবাদী সংগঠন ‘পানকৌড়ি’র প্রতিষ্ঠাতা বেলগাছি গ্রামের স্কুল শিক্ষক বখতিয়ার হামিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, একটি মুরগি খাওয়ায় ছয় কুকুরকে ভাতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খেতে দেন মাসুম। একে একে পাঁচটি কুকুর মারা যায়। বাকি একটার অবস্থা আশঙ্কাজনক। কুকুরগুলো পারুলসহ কয়েজন লালনপালন করতেন। এক কথায় পোষা কুকুর হিসেবেই ধরা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বেলগাছি গ্রামটি প্রাণীপ্রেমী হিসেবে পরিচিত। আমাদের একটি সংগঠন আছে। কোনো প্রাণী কারও ক্ষতি করলে সংগঠন থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার অনেক নজির আছে। তারপরও এমন জঘন্যতম কাজ করল। আমরা মন থেকে নিতে পারছি না। কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করব।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাসুমের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি মাসুম। 

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোস্তফা ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রাণী হত্যা অপরাধ। বিষ প্রয়োগে হত্যা করার অধিকার কারো নেই। প্রাণী কল্যাণ আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা জানি মাঝেমধ্যে অনেকের হাঁস-মুরগি মেরে ফেলে কুকুর। এ জন্য বিষ প্রয়োগে কুকুর হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ওই যুবকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

আফজালুল হক/আরএআর