পাঁচ দিন আগে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে অটোরিকশাসহ নিখোঁজ হন রায়হান মিয়া (১৯) নামে এক চালক। পরদিন সংশ্লিষ্ট থানায় এ বিষয়ে জিডি করেন রায়হানের পরিবার। তাদের ধারণা ছিল, চোরচক্রের সদস্যরা অটোরিকশা ছিনতাই করতে তাকে হত্যা করেছে। এরপর এ ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

তদন্তে নেমে অটোরিকশা চোরচক্রের খোঁজ পায় পিবিআই। যেখানে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে নিখোঁজ অটোচালক রায়হানের। প্রথমে নারায়নগঞ্জে আত্মগোপনে থাকা রায়হানকে উদ্ধার করে আটক করা হয়। তারপর একে একে আটক করা হয় চক্রটির আরও দুই সদস্য মতিউর রহমান (৩৭) এবং রিপন মিয়াকে (২৮)।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে নগরীর কেওয়াটখালি এলাকায় পিবিআই'র ময়মনসিংহ জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস।

তিনি জানান, গত ২৮ জুন রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানা এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা রায়হান মিয়াকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, তিনি নিজেই অটোরিকশাটি চুরি করে তার এলাকার মতিউরের মাধ্যমে ১৭ হাজার টাকায় কিশোরগঞ্জের তারাইলে বিক্রি করেছেন। মতি মিয়া সেই টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা রেখে বাকি টাকা রায়হানকে দিয়ে দেন। রায়হান ১৪ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা দিয়ে একটি স্মার্টফোন কিনে নারায়ণগঞ্জে চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি একটি গোডাউনে শ্রমিকের কাজ নেন।

এরপর রায়হানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পেশাদার অটোরিকশা ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সদস্য মতিউরকে ঈশ্বরগঞ্জের বিষ্ণুপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, চোরাই অটোরিকশাটি তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার তারাইলের রিপন মিয়ার কাছে বিক্রি করেছেন। পরে তাকেও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পিবিআই সদস্যরা।

গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, চোরাই অটোরিশাটি কয়েকটি হাত ঘুরে এবার নরসিংদী জেলায় হস্তান্তরের পরিকল্পনা ছিল। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেটি কিশোরগঞ্জ শহরের যশোদল এলাকা হতে উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা সংঘবদ্ধ অটোরিক্সা চোর চক্রের সদস্য। অভ্যাসগতভাবে কৌশলে অটোরিকশা চুরি ও বিক্রয় করে থাকে তারা। এ ছাড়া চক্রটি সম্পর্কে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। শিগগিরই অন্যদের আইনের আওতায় এনে পুরো চক্রের মূলোৎপাটন করা হবে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চুরি যাওয়া অটোরিকশার মালিক রুনা আক্তার (৩০) বাদী হয়ে বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ থানার মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান পিবিআই'র এ কর্মকর্তা। 

উবায়দুল হক/আরআই