রংপুরে কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর দাবিতে মানববন্ধন সমাবেশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।‌ সমাবেশ থেকে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষাসহ শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে পশুর হাট অন্যত্র সরিয়ে নিতে কলেজ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে নগরীর লালবাগে কারমাইকেল কলেজের প্রবেশদ্বারের সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় সচেতনরা অংশ নেন।

মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নয়ন মাহমুদ বিপ্লব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম আজিজ, ফিরোজ হোসেন, কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হোসেন।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সপড়ুয়া শিক্ষার্থী রুবেল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আদিবা তাবাসসুম, বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার প্রমুখ।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, বিগত দুই বছর থেকে করোনার প্রাদুর্ভাব বেশি থাকার কারণে ঈদুল আজহার পূর্বে লালবাগ হাট সংলগ্ন কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসে কোরবানির পশুর হাট বসানো হয়েছিল। ওই সময় কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন। এবার করোনার প্রকোপ না থাকা সত্ত্বেও হাট কমিটি কলেজ ক্যাম্পাসে গরুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্যাম্পাসে পশুর হাট না বসানোর জন্য অধ্যক্ষকে কয়েক দফা জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি ক্যাম্পাসে পশুর হাট না বসানোর কোনো উদ্যোগ নেননি। উল্টো কলেজ শিক্ষকদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দিয়ে সামগ্রিক তদারকি ও পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছেন।

কারমাইকেল কলেজের মতো শতবছরের ঐতিহ্যবাহি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোরবানির পশুর হাট বসানোর মধ্য দিয়ে কলেজের সুনাম, সুষ্ঠু পরিবেশ ও প্রকৃতিকে নষ্ট করার মতো সিদ্ধান্ত কলেজ প্রশাসন নিয়েছেন বলেও অভিযোগ তোলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

অবিলম্বে কলেজ ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে হাট বসানোর সিদ্ধান্ত থেকে প্রশাসনকে সরে আসার আহ্বান জানান তারা। পরে সমাবেশ শেষে একটি মিছিল কলেজ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।

এদিকে ক্যাম্পাসে হাট বসানোর অনুমতি প্রসঙ্গে কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আমজাদ হোসেন জানান, ক্যাম্পাসে হাট বসানোর অনুমতি দেওয়ার কোনো এখতিয়ার আমার নেই। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসের বৃন্দাবন মাঠে বসানো যায় কিনা সেটি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা শিক্ষক পরিষদের নেতাদেরসহ সাধারণ শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করেছি। তারা কোরবানির পশুর হাট বসানোর ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনাসহ সবকিছু বিবেচনা করে তারপর মতামত জানাবেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো আমিও ক্যাম্পাসে হাট না বসানোর পক্ষে।

এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের বাজার শাখা ও লালবাগ হাট কমিটি সূত্রে জানা গেছে, কোরবানির পশুর জন্য লালবাগ হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জায়গা সংকুলান না হওয়াতে তারা হাট সংলগ্ন কলেজ ক্যাম্পাসের বৃন্দাবন মাঠের একাংশ ব্যবহারের জন্য কলেজ প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছেন। এর আগে বিগত দুই বছর ওই মাঠে কোরবানির পশুর হাট বসানো হয়েছিল। তখন সরকারি নির্দেশনার আলোকে করোনার সংক্রমণ রোধসহ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে এটি করা হয়।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস