কৃষকদের সমস্যা সমাধানে কথা বলছেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য ও মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হাসান

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জালালপুর গ্রামের দুই শতাধিক চাষি মুখে হাসি ফোটালেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি।

স্থানীয়ভাবে বিরোধের জেরে গত এক সপ্তাহ ধরে জালালপুর গ্রামের দেড় শতাধিক বিঘা জমিতে বোরো ধানের পানি সেচ বন্ধ ছিল। শুষ্ক মৌসুমে জমিতে সেচ দিতে না পারায় বিপাকে পড়ে এ স্কিমের দুই শতাধিক চাষি। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দ্বারস্থ হয়েও কোনো প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে ফসল রক্ষা নিয়ে চিন্তায় পড়েন ভুক্তভোগী কৃষকরা। 

বিষয়টি স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পেরে গতকাল শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি সেচের ব্যবস্থা করে ভুক্তভোগী চাষিদের মুখে হাসি ফোটান।

জানা যায়, মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে সেচ পাম্প মালিক সোলাইমান ও তার প্রতিবেশী মকছেদ আলীর আম বাগান দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের লাইন নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে মকছেদ আলী বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে অভিযোগ করেন তার জমির ওপর দিয়ে বিদ্যুৎলাইনের সংযোগ টানলে আম বাগানের ক্ষতি হচ্ছে। অভিযোগ পেয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ সেচ পাম্প মালিক সোলাইমানের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেন। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকায় বোরো ধান চাষ ব্যাহত হয়। 

ঘটনাস্থল পরিদর্শন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, জনগণ হলো আমার মূল শক্তি। জনগণের ভোটে আজ আমি এখানে। সরকার কৃষকদের দুঃখ দূর করার জন্য রাত-দিন কাজ করছে। সেখানে কিছু লোকের জন্য এতগুলো ফসলের ক্ষতি মেনে নেওয়া যায় না। 

এসময় মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) পলাশ দেবনাথ ও মণিরামপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যবস্থাপক অরুণ কুমার কুন্ডুকে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন তিনি। 

এক পর্যায়ে তারা ঘটনাস্থলে এলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হাসান ও অরুণ কুমারকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করায়  তাদের ভৎসনা করে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী। 

প্রতিমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশনা প্রদান করে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার কৃষকের ধান চাষের জন্য সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে কি করলে সুষ্ঠুভাবে কৃষক ঘরে ধান তুলতে পারবে সেই ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন। 

তিনি বলেন, আগে কৃষক ধান চাষ করবে। তারপর যদি বিবাদী কোনো বাধা দেয় তাহলে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাকে জরিমানা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।

এ বিষয়ে সেচ পাম্প মালিক সোলাইমান ঢাকা পোস্টকে জানান, ভুয়া অভিযোগের ভিত্তিতে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ব্যবস্থাপক সঠিক তদন্ত না করে দেড় শতাধিক বিঘা জমির বোরো সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করে দেন। ফলে গত এক সপ্তাহ ধরে স্কিমে সেচ সরবরাহ না করার কারণে ফসল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়। প্রতিমন্ত্রী এসে বিষয়টি সমাধান করে দেয়ায় আমাদের অনেক উপকার হলো। 

তিনি বলেন, আমরা প্রতিমন্ত্রীর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রতিমন্ত্রী আমাদের কৃষকের জন্য যা করলেন তার ঋণ আমরা শোধ করতে পারব না। 

জাহিদ হাসান/এমএএস