কোরবানির জন্য বড় জাতের গরুর কদর বেশি। দেখতে সুন্দর, গঠনেও আকর্ষণীয়, এমন গরু দিয়ে কোরবানি দিতে চান সচ্ছল মুসলমানরা। এবারের পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে 'বিগ বস' আর 'রাজা বাবু' নামের তেমন দুটি ষাঁড় আলোচনায় রয়েছে মাগুড়া জেলায়।

মাগুরার শালিখা উপজেলা বড় আমানিয়ান গ্রামের খামারি মোহন কুমার মন্ডল এ কালো রঙের এ দুটি ষাঁড়কে লালনপালন করেছেন। সাড়ে ৬ ফুট লম্বা ‘বিগ বসের’ ওজন প্রায় ৩২ মণ। আর ৫ ফুট লম্বা 'রাজা বাবুর' ওজন প্রায় ২৫ মণ। এর মধ্যে বিগ বসের দাম ১০ লাখ আর রাজা বাবুর দাম ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে খামারি মোহন কুমার মন্ডলের বাড়িতে গেলে ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে কালো রঙের দুটি ষাঁড় আমি লালনপালন করছি। অনেক যত্নে গরু দুটিকে লালনপালন করেছি। শখ করে আদরের গরু দুটির নাম দিয়েছি ‘বিগ বস’ আর 'রাজা বাবু'।

কী ধরনের খাবার খায় বস আর রাজা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়েছি এদের। গরু দুটির প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আছে খেসারি, গমের ভুসি, ছোলা, ভুট্টা ও খড়। খুবই যত্নসহকারে দেশীয় উপায়ে আমি এই ষাঁড় দুটিকে বড় করেছি।

গরু দুটির স্বভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, বিগ বস বসে থাকে বসের মতো। তবে তার রাগ একটু বেশি। আর রাজা বাবু একটু চঞ্চল প্রকৃতির। এটি সুযোগ পেলেই ছোটাছুটি শুরু করে। তবে রাজা বাবু রাজকীয় ভাব নিয়েই থাকে।

বিগ বসকে নিয়ে এলাকায় বেশ কৌতূহল রয়েছে জানিয়ে এই খামারি বলেন, প্রতিদিন দূর থেকে অনেকেই আমার এই গরু দুটি দেখতে আসেন। লালনপালন ও ব্যয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই আমি ষাঁড় দুটির দাম চাচ্ছি ১৫ লাখ টাকা। অনেক ব্যাপারিও আসছেন গরু দুটি দেখতে। দামও বলেছেন। আমি হাটে নিয়ে যাব। ভালো দাম পেলে বিক্রি করব।

মাগুরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. হাদিউজ্জামান বলেন, শালিখা উপজেলার বড় আমানিয়ান গ্রামের মোহন মন্ডল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে দুটি কালো রঙের ষাঁড় গরু লালনপালন করেছেন। আমাদের মাঠকর্মীরা সব সময় তাকে পরামর্শ দিয়ে এসেছেন। বাজারমূল্য ভালো পেলে লাভবান হবেন এ খামারি।

তিনি আরও বলেন, মোহন মন্ডলের গরু দুটি দেখে এলাকায় অনেকে গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসায় জড়িত হয়েছেন। আমরা নিয়মিত তাদের তদারকি করছি। আশা করছি ভবিষ্যতে জেলার কোরবানির পশুর চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছরে মাগুরা জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ২৯ হাজার ৪০৫টির মতো। জেলায় উৎপাদিত হয়েছে ৩১ হাজার ৯৯৭টি পশু। জেলায় মোট খামারির সংখ্যা রয়েছে ৪ হাজার ৯৪৫টি। চার উপজেলায় ১২টি মেডিকেল টিম রয়েছে। তারা কোরবানির পশুর হাটগুলোয় তাদারকি করবে।

এ কে এম অপূর্ব/এনএ