দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর প্রচারণার মাইকের ব্যাটারি নিয়ে গেল চোর
দীর্ঘদিন ধরে রিকশায় মাইকিং করে সংসার চালাচ্ছিলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী খলিলুর রহমান। এখন থমকে গেছে তার জীবন যাত্রা। কয়েক দিন আগে রিকশায় মাইক ও ব্যাটারি রেখে নামাজ পড়তে যান তিনি ও রিকশাচালক। ফিরে এসে দেখেন রিকশা থেকে তার মাইকের ব্যাটারি চুরি হয়ে গেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী খলিলুর রহমান (৫৪) মাদারীপুর শহরের রকেট বিড়ি এলাকার বাসিন্দা।
খলিলুর রহমান বলেন, গত মঙ্গলবার (২৮ জুন) শহরের কুলপদ্দী এলাকায় মাইকিং প্রচারণায় গিয়ে সেখানে একটি মসজিদের পাশে রিকশা রেখে আমিও রিকশাচালক আসরের নামাজ পড়তে যাই। নামাজ শেষ এসে দেখি আমার প্রচারণার মাইকের ব্যাটারি নেই।
৩০ বছর ধরে মাইক দিয়ে বিভিন্ন বিষয় প্রচার করে সংসার চালাচ্ছি। এতে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা আয় হতো। সেই টাকা ভাগ করে নিতাম দুজনে। কথাগুলো বলতেই হাউমাউ করে কান্নাকাটি শুরু করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও মানুষ যেকোনো বিষয় বললে তা মুখস্থ করে আমার কণ্ঠকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা করতাম। এটা দেখে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন আমাকে দুটি মাইক-সেট ও রিকশা উপহার দেন। সেই মাইকের ব্যাটারি চুরি হওয়ায় এখন পথে বসে পড়েছি।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী খলিলের রিকশাচালক শহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাইকের ব্যাটারি চুরি হওয়ায় আমাদের প্রচার করা এখন বন্ধ হয়ে পড়েছে। এখন আমাদের সংসার কীভাবে চলবে, কে আমাদের পাশে দাঁড়াবে?
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী খলিলের স্ত্রী খুকুমণি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ব্যাটারি না থাকার কারণে সে এখন প্রচার করতে পারছে না। আমাদের দুই মেয়ে। এক মেয়ে স্কুলে পড়ে।
এ বিষয়ে ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজিব মাহমুদ কাওসার ঢাকা পোস্টকে বলেন, তাকে অবশ্যই সাহায্য সহযোগিতা করা হবে। সে এমন একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাকে কেহ এক লাইন লেখা দিলে সে মুখস্থ করে মাইকিং এর প্রচার করে।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের কাছে এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে আমরা অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্হা নেব।
মাদারীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দীন বলেন, বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। তাকে অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে।
রাকিব হাসান/এমএএস