র‌্যাব-৪ এর পরিচালক ও সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশের ডিআইজি মোজাম্মেল হক বিপিএম, পিপিএম বলেছেন, চাটমোহরের ফৈলজানা-কুয়াবাসী অঞ্চল এক সময় নিষিদ্ধ চরমপন্থি সর্বহারাদের অভয়ারণ্য ছিল। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী ও খুন ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সময়ের সাথে সাথে সবার সহযোগিতায় আজ এ অঞ্চলে শান্তি ফিরেছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আবার যদি এই অঞ্চলে যেকোনো রঙে, যেকোনো চেহারায় আবার কেউ অস্ত্রের ঝনঝনানি করতে চায়, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতে চায়। আবার যদি এই অঞ্চলে সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয় তাহলে র‌্যাব, পুলিশের পাশাপাশি সংগঠিত জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তাদের এই অঞ্চল ছাড়া করব, তাদের আইনের হাতে তুলে দেব। এটি শান্তির জনপদে পরিণত হয়েছে, সেই শান্তির জনপদকে আমরা অক্ষুণ্ন রাখব।

মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দুপুরে পাবনার চাটমোহর উপজেলার কুয়াবাসী কুঠিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ঈদ আনন্দমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, সকল অপরাধের মা হলো মাদক। কাজেই সন্তানদের মাদক থেকে দূরে রাখতে হবে। পুলিশের একার পক্ষে মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সবাইকে সচেতন হতে হবে। আপনার সন্তান কোথায় যায়, কি করে, কার সঙ্গে মেশে, এগুলো আপনাকেই খোঁজখবর রাখতে হবে। বাবা-মা যদি তার সন্তানের খোঁজ খবর রাখতে না পারেন, তাহলে সেই সন্তান ভালো হতে পারে না। এসএসসি পাশের আগে সন্তানের হাতে কখনও মোবাইল ফোন তুলে দেওয়া যাবে না। সমাজের সকল ভালো মানুষ একসঙ্গে থাকলে, অপরাধীরা অপরাধ করতে পারবে না।

মোজাম্মেল হক বলেন, শিক্ষার পাশাপাশি সন্তানদের সাংস্কৃতিক চর্চা ও খেলাধুলায় উৎসাহি করতে হবে। এগুলো শিশুদের মানসিক বিকাশ ও সহনশীল চর্চা বৃদ্ধি করে। এর মাধ্যমে ভালো মানুষ বেরিয়ে আসতে পারে। এজন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ থাকতে হবে। মেয়েদের বাল্যবিবাহ না দিতে আহ্বান জানানোর পাশাপাশি শরৎগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কাজ শিগগির শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

দিনব্যাপী ঈদ আনন্দমেলার উদ্বোধন ও বক্তব্য দেন, সেতু বিভাগের প্রকল্প পরিচালক লিয়াকত আলী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কনসালটেন্ট প্রকৌশলী ওসমান গনি, ও আর খাঁন গ্রুপের চেয়ারম্যান ডা. এম এ ওহাব খান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা পারভীন, ফৈলজানা ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, বৃহত্তর ধানুয়াঘাটা সোসাইটির (জিডিএস) সভাপতি প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম মনির।

লেখক ও সমাজকর্মী সুমন নুরের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, পবাখালী উচ্চ চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুল ইসলাম পলাশ, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলহাজ তৈয়ব আলী, সাবেক ছাত্রনেতা বেলাল হোসেন, শরৎগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গোলাম রসুল, ফৈলজানা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছালাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আলহাজ হোসেন জয়, প্রবীণ ব্যক্তি ওসমান আলী মাস্টার, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা বেলাল হোসেন, শহিদুল ইসলাম জালাল প্রমুখ।

এর আগে অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে ও ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথি ও এলাকার গুণীজনদের হাতে তুলে দেয়া হয় সম্মাননা ক্রেস্ট।

ঈদ আনন্দমেলা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে ছিল, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ইসলামি সঙ্গীত, কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, চকলেট দৌঁড়, মোড়গ লড়াই, বেলুন ফোটানো, বালিশ খেলা, উপস্থিত দর্শকদের জন্য ফ্রি লটারি, স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে মুর্শিদী গানের আসর। এছাড়া ছিল দিনব্যাপী বিনামূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা ও রক্তের গ্রুপ নির্ণয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

রাকিব হাসনাত/এমএএস