বরিশালের উজিরপুরে স্বামীর মোবাইলে তরুণীর আপত্তিকর ছবি পাওয়া নিয়ে বিরোধের জেরে স্ত্রীকে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। উপজেলার বড়াকোঠা ইউনিয়নের বড়াকোঠা গ্রামে মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দিবাগত মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বড়াকোঠা গ্রামের স্বপন বেপারির সঙ্গে ১৩ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় বামরাইল ইউনিয়নের হস্তিশুণ্ড গ্রামের বজলু হাওলাদারের মেয়ে রুবি আক্তারের (৩০)। তাদের সংসারে দুই ছেলে রয়েছে।

কিছুদিন ধরে স্বামী স্বপন অন্য নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি স্ত্রী জানার পর থেকে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। বিরোধের ঘটনা একাধিকবার স্থানীয়ভাবে মিমাংসাও করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে স্বামী স্বপনের মোবাইলে এক তরুণীর আপত্তিকর ছবি পান রুবি। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা পরে হাতাহাতি হয়।

রুবির সন্তান, ভাই ও বাবা অভিযোগ করেন, বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে রুবিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যান স্বপন।

রুবির ছেলে রাহাত বলেন, বাবার সঙ্গে অন্য মেয়ের প্রেমের বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়েছে। পরে মাকে বিছানার পাশে আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই।

নিহত রুবির ভাই রাসেল বলেন, বুধবার রাতে রুবি আমার মোবাইলে কল দিয়ে বাবা-মার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল। আমি বলেছি সকালে কথা বলিস, তারা ঘুমাইছে। এরপর ও আর কোনো কথা না বলে ফোন কেটে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর ভোর ৩টার দিকে ভাগ্নে রাহাত ফোন দিয়ে জানায়, ওর মাকে ওর আব্বা হত্যা করেছে। এ কথা শুনে স্থানীয় লোকজন নিয়ে স্বপনের বাড়িতে গেলে স্বপন পালিয়ে যান।  

রুবির বাবা বজলু হাওলাদার জানান, জামাতার পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় আমার মেয়েকে হত্যা করেছে স্বপন।

উজিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আর্শাদ বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এই ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা মরদেহ মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বলতে পারব আসল রহস্য। তবে অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছেন। ঘটনার পর এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। 

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরআই