‘ভাই মাফ করে দিয়েন, আমি মায়ের কাছে চলে গেলাম’
ফরিদপুরে চিরকুট লিখে সবুজ ঢালি (২২) নামে এক তরুণ আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার (১৫ জুলাই) রাত ১০টার দিকে শহরের রঘুনন্দনপুর হাউজিং এলাকার বি-ব্লকের আওলাদ হোসেনের বাসার প্রবেশ পথের ফটক ভেঙে মরদেহটি উদ্ধার করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
সবুজ ঢালি মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী থানার বানিয়া গ্রামের আব্দুল হাসেম ঢালির ছেলে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে মরদেহের পাশের সেলফে তরুণের মানি ব্যাগ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। সেখানে লেখা ছিল, ‘আমি জানি আমি খারাপ। তাই আমি চলে গেলাম। আমাকে সবাই মাফ করে দেবেন। আমি জানি না আমার কি হবে। ভালো থেকো সবাই।’
একটি মুঠোফোন নম্বর দিয়ে ওই চিরকুটে আরও লেখা হয়, ‘ওর থেকে আমি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা পাই। ভাই মাফ করে দিয়েন। আমি মায়ের কাছে চলে গেলাম।’
বিজ্ঞাপন
সবুজের ভাই জসিম ঢালি বলেন, আমি খাবার হোটেলের ব্যবসা করি। স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে আর ছোট ভাই সবুজকে নিয়ে ওই বাসায় ভাড়া থাকি। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বাড়ির মালিকের ছেলে ফোন করে জানায়, আমার বাচ্চারা বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, বাসার দরজা ভেতর থেকে আটকানো রয়েছে। বাচ্চারা ঘরে ঢুকতে পারছে না। আমার স্ত্রী পার্লারে কাজ করে। সেও বাসায় ছিল না। খবর পেয়ে আমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফেলে রেখে বাসায় ছুটে এসে দরজা ভেঙে ছোট ভাইয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাই।
ভাবি লিজা বেগম বলেন, ৪ মাস আগে এই বাসায় উঠেছি। ৩ মাস ধরে দেবর আমাদের সঙ্গেই থাকে। শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে খাওয়া-দাওয়া করে আমি পার্লারে কাজে চলে যাই।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দেড় বছর আগে সবুজের মায়ের মৃত্যু হয়েছে। আগে সবুজ একটা ব্যবসা করতেন। মাথা ব্যথা ও অসুস্থতার জন্য বর্তমানে সে কিছুই করত না।
শিশুরা জানায়, শুক্রবার বিকেলে তাদের চাচা সবুজ বলে, তার মাথা ব্যথা করছে। তিনি ঘুমাবেন। এই কথা বলে তাদের বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে দেয়।
কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল বাশার বলেন, কোনো আপত্তি না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়া পরিবারের সদস্যদের হাতে সবুজের মরদেহটি তুলে দেওয়া হয়েছে। আর চিরকুটে যে মুঠোফোন নম্বরটি রয়েছে তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা হবে।
জহির হোসেন/এসপি