কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নয়ন কুমার সরকার (২২) নামে এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্বজনরা। সোমবার (১৮ জুলাই) দুপুরে উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের নন্দনালপুর বাজার এলাকায় এ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। 

মিছিল শেষে নন্দনালপুর ইউনিয়নের হাবাসপুর বহলার চরে মরদেহটি সৎকার করা হয়। নিহত নয়ন কুমার সরকার ইউনিয়নের নন্দনালপুর গ্রামের যগেশ কুমার সরকারের ছেলে। তিনি আলাউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, কলেজছাত্র নয়নকে কৌশলে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এদিকে কলেজছাত্র নয়ন কুমার সরকারকে হত্যার অভিযোগে মো. আলম (৩৮) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার (১৭ জুলাই) রাতে জেলার খোকসা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার দুপুরে আদালাতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আলম নন্দনালপুর ইউনিয়নের বাঁশআরা গ্রামের মো. মুন্সীর ছেলে।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে , নন্দনালপুর ইউনিয়নের বাঁশআড়া গ্রামের এক মেয়ের সঙ্গে কলেজছাত্র নয়ন কুমার সরকারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে নয়নকে শাসন করা হয়েছিল। দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এরই মধ্যে গত শনিবার (১৬ জুলাই) মধ্যরাত থেকে নিখোঁজ ছিল কলেজছাত্র নয়ন কুমার সরকার। নিখোঁজের পরদিন রোববার ভোররাতে নন্দনালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ নতুনপাড়া মাঠের মধ্যে সড়কের পাশে নয়নকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পাওয়া যায়। খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠান। পরে ওই দিন দুপুরে ঢাকা যাওয়ার পথে তার মৃত্য হয়। পরে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহত নয়নের বাবা যগেশ কুমার সরকার হত্যার অভিযোগে গত রোববার রাতে কুমারখালী থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় নয়নের প্রেমিকার চাচাসহ আটজনকে আসামি করা হয়। 

যগেশ কুমার সরকার বলেন, প্রেমের জেরেই আমার ছেলেকে আসামিরা ডেকে নিয়ে হাতুড়ি, লোহার রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। থানায় মামলা করেছি। উপযুক্ত বিচার চাই। 

নিহত নয়নের বোন লতা রাণী বলেন, ওরা ভাইকে ডেকে নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরা বিচার চাই।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, প্রেম সংক্রান্ত জেরে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা করেছেন নিহতের বাবা। ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

রাজু আহমেদ/আরএআর