সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে প্রতিবন্ধী শিশুকে হত্যার দায়ে চাচাসহ দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এই রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন বেলকুচি উপজেলার ছোট বেড়া খারুয়া গ্রামের নিহত শিশুর চাচা সাদ্দাম হোসেন (৩৩) ও একই গ্রামের আমজাদ আলীর ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য আকবর আলী (৪৪)।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আব্দুর রহমান ও আদালত পরিদর্শক মো. মোস্তফা কামাল।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বেলকুচি উপজেলার ছোট বেড়া খারুয়া গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের পরিবারের সঙ্গে তার চাচাতো ভাইদের সঙ্গে জমি-সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। সাদ্দাম হোসেন চাচাতো ভাইদের শায়েস্তা করার জন্য আপন বড় ভাইয়ের বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকন্যা চায়না খাতুনকে (১১) হত্যার পরিকল্পনা করে। এ কাজে সহযোগিতা করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আকবর আলী।

২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর বিকেলে চায়না খাতুন সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে বেড়াতে আসে। রাতের খাবার খেয়ে চায়না ঘুমিয়ে পড়ে। রাতে সাদ্দাম হোসেন চায়না খাতুনকে ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়ির বাইরে এনে গলা টিপে হত্যা করে। পরে মরদেহ বেড়া খারুয়া চরে এনে চাকু দিয়ে গলা কেটে ফেলে রেখে চলে যান।

পরদিন সকালে চায়নার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে চায়নার বাবা জহুরুল প্রামাণিক ঘটনাস্থলে এসে জমি নিয়ে বিরোধে তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। পরে প্রতিপক্ষ চাচাতো ভাইদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন।

পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, জমি নিয়ে বিরোধের কারণে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য সাদ্দাম হোসেন ইউপি সদস্য আকবর আলীর প্ররোচনায় আপন ভাতিজি চায়না খাতুনকে হত্যা করেন। পুলিশ সাদ্দাম হোসেন ও আকবর আলীকে গ্রেপ্তার করে।

এ হত্যাকাণ্ডে তারা দুজনের হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত মঙ্গলবার রায় দেন।

শুভ কুমার ঘোষ/এনএ