ভোলার দৌলতখান উপজেলার বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন মদনপুরে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় ৭৪২টি পরিবারের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাবমেরিন ক্যাবলে সমস্যার কারণেই এমনটি হয়েছে।

মদনপুরবাসীর আয়ের বড় একটি উৎস্য হলো মহিষের দুধ থেকে দধি ও রসগোল্লার জন্য ছানা তৈরি করা। এসব দুগ্ধজাত পণ্য জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু টানা এক মাসেরও অধিক সময় ধরে বিদুৎ না থাকায় এসব ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। 

ফ্রিজ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন কোমল পানীয় বিক্রেতারা। মোমবাতির আলোতে পড়তে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায়ও ব্যাঘাত ঘটছে।

মদনপুরের স্কুল পড়ুয়া রিয়াজুল ইসলাম সজিব বলেন, সামনে পরীক্ষা, অথচ বিদ্যুৎ না থাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়তে হয়। ফ্যান না চলায় অস্থির গরম সহ্য করতে হয়, তাই ভালো মতো পড়াশুনা করা যায় না।

মদনপুরের চেয়ারম্যান বাজারের দধি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মহিষের দুধ ক্রয় করে তা থেকে দধি তৈরি করে বিক্রয় করে আসছিলেন তারা। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় তাদের সেই ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। এখন আর তারা বাজারে দধি বিক্রি করতে পারছেন না।

ফাস্টফুড ব্যবসায়ী মো. ফারুক জানান, তিনি মদনপুর চরে ফ্রিজের মাধ্যমে ঠান্ডা কোমলপানীয় বিক্রয় করে আসছিলেন। এই কোমলপানীয়গুলো খেওয়া নৌকায় প্রায় ১৫/২০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে মূল ভূখন্ড থেকে ক্রয় করে মদনপুর বাজারে ফ্রিজ আপ করে বিক্রয় করে থাকে। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় বিক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে না।

ইউপি সদস্য মো. শাহে আলম জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় এখানের সমস্যাগুলো চরম আকার ধারণ করেছে, তাই মদনপুরে দ্রুত বিদ্যুৎ চালুর দাবি করেন।

ভোলা পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. আলতাফ হোসেন জানান, ভোলার মেঘনা নদীতে দৈনিক প্রায় ৪ থেকে ৫শ জাহাজ আসা-যাওয়া করে। কোনো একটি জাহাজ নোঙর করার সময় হয়তো মদনপুরের সাবমেরিন ক্যাবেলটি কেটে ফেলেছে। এ কারণে জুন মাসের ২৩ তারিখ থেকে মদনপুরে বিদ্যুৎ বিছিন্ন রয়েছে। 

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ চালুর জন্য তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে কয়েক দফায় প্রকৌশলিদের সঙ্গে সভা করেছেন। এ ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন। প্রধান কার্যালয় থেকে একটি টিম ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে মদনপুর এসে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

আরআই