মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ২৬ বছর পর আওয়ামী লীগ-সমর্থিত (নৌকা প্রতীকের) প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। বুধবার (২৭ জুলাই) অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহিন মুন্সিকে হারিয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন।

সিরাজুল ইসলাম নৌকা প্রতীক নিয়ে ৬ হাজার ৫৭৭ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহীন মুন্সি চশমা প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ৬৩০ ভোট পান।

জানা যায়, ১৯৯৬ সাল থেকে এ ইউনিয়নে এককভাবে বিএনপির প্রার্থী জয় লাভ করে আসছিলেন।

সর্বশেষ গত ২৮ নভেম্বর ইউনিটিতে নির্বাচন হয়। ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে ১৭ হাজার ভোটার রয়েছেন। সে নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত ৪ বারের চেয়ারম্যান তোতা মুন্সি ৫ বারের মতো জয়লাভ করেন। নির্বাচনের পর থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। গত ৫ মে অসুস্থতার কারণে তোতা মিয়া মুন্সি মৃত্যুবরণ করেন। এরপরে এখানে উপনির্বাচন তফসিল ঘোষণা হয়। উপনির্বাচনে তোতা মিয়া মুন্সির ছেলে শাহীন মুন্সি চশমা প্রতীক নিয়ে সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ ইউনিয়নের মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিলেন। তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন চেয়েছিলেন। আমি যখন নৌকা প্রতীক পাই, তখন থেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করি। মানুষের ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলাম। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছিলাম। আজ নির্বাচনে জয়লাভ করার মাধ্যমে সে ভালোবাসা পরিপূর্ণ হয়েছে।

তবে ইভিএমকে জাদুর মেশিন আখ্যা দিয়ে পরাজিত প্রার্থী শাহিন মুন্সি বলেন, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ইভিএমে ভোট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধিতা করে আসছিলেন। কেন করত, আজ তার প্রমাণ পেলাম। আমরা বজ্রযোগিনী ইউনিয়নবাসী এখন থেকে ইভিএমের বিরোধিতা করি।

তিনি আরও বলেন, সারা দিন ভালোভাবেই ভোট হয়েছিল। যারা ভোট গ্রহণ করলেন, তারা ফলাফল দিলেন না। বাইরে থেকে দুজন ব্যক্তি এসে ফলাফল পরিবর্তন করে দিয়ে গেলেন। আমাদের নিশ্চিত জয়কে পরাজয় হিসেবে দেখালেন।

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আফছার উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, এ ইউনিয়নটি বিএনপি-অধ্যুষিত ছিল। দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর বিএনপির নেতা চেয়ারম্যান ছিলেন। মুন্সিগঞ্জের সব ইউয়িনে উন্নয়ন হলেও এই ইউনিয়নের তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। এলাকার মানুষ তাদের উন্নয়ন চেয়েছেন। নিজেদের ভাগ্য বদলাতে তারা এবার জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত ব্যক্তিকে জয়লাভ করিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন আল জুনায়েদ বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি কেন্দ্রে তৎপর ছিলেন। এর ফলে ইউনিয়নটিতে সুষ্ঠু একটি ভোট হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম জানান, ইভিএমে কোনোভাবে ভোট প্রভাবিত ও জালিয়াতির সুযোগ নেই। যে যত ভোট পেয়েছেন, সেই ফলাফল হয়েছে। আজ প্রিন্টে যে ফলাফল এসেছে, দুদিন পরে প্রিন্ট করলে একই ফলাফল বের হবে। যারা অভিযোগ করছেন, তারা তাদের অজ্ঞতার কারণেই বলছেন।

ব.ম শামীম/এনএ