সিন্ডিকেটের কবলে পঞ্চগড়ের চা শিল্প। কাঁচা চা পাতার ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা দিনের পর দিন লোকসান গুনেই সবুজ অর্থনীতির চা শিল্পটাকে ধরে রেখেছেন। এভাবে চলতে থাকলে ধ্বংসের মুখে পড়তে পারে চা শিল্প। বারবার কৃষকরা চা পাতার ন্যায্যমূল্য পেতে রাজপথে মানববন্ধন ও প্রশাসনে স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে জোরালো আন্দোলন করে আসছে। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এবার জেলা প্রশাসন নড়ে চড়ে বসেছে।

গত তিন দিনে পঞ্চগড়ের ৬টি চা কারখানায় ভ্রাম্যমাণ অভিযান চালিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করেছে।

গত সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ চা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুনসহ মডেল থানাসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুল হক।

অভিযানে জেলার মৈত্রী টি ফ্যাক্টরি ও নর্থ বেঙ্গল সেন্ট্রাল টি ফ্যাক্টরি নামের ওই দুই কারখানাকে সরকারিভাবে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম দামে কাঁচা চা পাতা কেনায় ১১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

গত মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার কাঁচা চা পাতা মূল্য নির্ধারণ কমিটি কর্তৃক সর্বশেষ ধার্যকৃত মূল্য প্রদর্শন না করা ও নির্ধারিত মূল্যের কম মূল্যে কৃষকদের নিকট থেকে চা পাতা ক্রয় করায় মরগ্যান টি ফ্যাক্টরিকে ১২ হাজার টাকা ও সাজেদা রফিক টি ফ্যাক্টরিকে ৫ হাজার করে মোট ১৭ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।

একই দিন জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করেছেন নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ চন্দ্র সাহা। তিনি উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের সুরমা অ্যান্ড পূর্ণিমা টি ফ্যাক্টরি ও রয়েল টি ফ্যাক্টরি নামের দুটি কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে একই অভিযোগে দুই কারখানাকে ১২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছেন।

জেলা প্রশাসনের সদর উপজেলা ও তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জানান, সরকারিভাবে মূল্য নির্ধারণ কমিটি কাঁচা চা পাতার মূল্য ১৮ টাকা নির্ধারণ করা স্বত্ত্বেও সেই নিয়ম অমান্য করে কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে চা পাতা কিনে আসছিলেন কারখানাগুলো। কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। এসব আদায়কৃত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করা হচ্ছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এমএএস