মহান মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণ করে ১ হাজার ৯৭১টি বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছ রোপণ করেছেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার খাশিয়াল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বি এম বরকত উল্লাহ। এ ছাড়া ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ডের ৭১টি পরিবারের মাঝে দুটি করে ফুল ও ফলের (আম্রপালি) গাছ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন তিনি।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) সকালে ইউনিয়নের বড়দিয়া থেকে কালিয়া ছয় কিলোমিটার প্রধান সড়কের দুপাশে সীমানা অবধি ১৯৭১টি গাছ রোপণ করা হয়।

৮০ জন স্বেচ্ছাসেবকের অংশগ্রহণে ও বড়দিয়া শাখার ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপক প্রবীর কুমার রায়ের তত্ত্বাবধানে এই বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।

ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য রবিউল ইসলামকে প্রধান করে অন্যান্য ইউপি সদস্যসহ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সমাজকর্মী বিধান চন্দ্র দাস, আরিফ শেখ সোহেলকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের পরিবেশ ও বৃক্ষরোপণ স্থায়ী কমিটি গঠিত হয়েছে।

কমিটির প্রধান ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম বলেন, একটি গাছ কাটলে সেখানে আরও দুটি গাছ লাগাব। কারণ, আগামী প্রজন্মের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য গাছের কোনো বিকল্প নেই।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সমাজকর্মী বিধান চন্দ্র দাস বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। প্রতিটি দেশের আয়তনের ২৫ শতাংশ বনায়ন থাকার কথা থাকলে ও আমরা নিজেদের প্রয়োজনে বৃক্ষ নিধন করছি ও বনায়ন ধ্বংস করছি। যার প্রভাব আমাদের জনজীবনে পড়তে শুরু করছে।

তা ছাড়া আজ রোপিত চারা গাছটি ১০ বছর পরের টাকার উৎস বটে। খাশিয়ালি ইউনিয়নে শুধু নয়, সারা দেশে নিজস্ব উদ্যোগে সুপরিকল্পিতভাবে বৃক্ষরোপণে মনোযোগ দেওয়া উচিত বলে জানান তিনি।

খাশিয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বি এম বরকত উল্লাহ বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে পরিবেশ ও বৃক্ষরোপণ স্থায়ী কমিটির উদ্যোগে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণে রেখে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৭১টি পরিবারের মধ্য ধনী-গরিব নির্বিশেষে দুটি করে ফল ও ফুলের গাছ বিতরণ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বাড়িতে গাছ পৌঁছে দেওয়া হবে।

চলতি মৌসুমে বড়দিয়া থেকে কালিয়া প্রধান সড়কের দুপাশে খাশিয়ালি ইউনিয়নের ছয় কিলোমিটার অবধি ১ হাজার ৯৭১টি বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছ রোপণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা গাছের নির্গত অক্সিজেন নিয়ে বেঁচে থাকি। আমরা যে দূষিত কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত করি, গাছ সেই কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য গাছের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যা করে বাঁচিয়ে রাখার উদ্যোগও নিতে হবে।
 
ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণের সময় স্থাণীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও স্কুল-কলেজের ছাত্র-শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

এনএ