রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে এক তরুণী। শনিবার (৩০ জুলাই) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই তরুণীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ ঘটনায় তরুণী প্রেমিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন।

বর্তমানে ওই তরুণীকে নিরাপত্তার স্বার্থে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। আজ (৩১ জুলাই) তার মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে। এদিকে তরুণী বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেওয়ার পর থেকে প্রেমিক শারাফাত হোসেন সোহাগ পলাতক রয়েছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হারাগাছ পৌর এলাকার মিয়াপাড়ার ওই তরুণী রংপুর সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি রংপুর আইন কলেজে প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত। প্রেমিক শারাফাত হোসেন সোহাগ একই এলাকার বস্তা ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেনের ছেলে। সোহাগ স্থানীয় হারাগাছ সরকারি কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। এছাড়া তিনি ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। 

বিয়ের দাবি তোলা ওই তরুণী বলেন, দুই বছর ধরে সোহাগের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। এরই মধ্যে সোহাগ তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। হঠাৎ শনিবার বিকেলে জানতে পারি, সোহাগ গোপনে কাউনিয়ার মীরবাগ এলাকায় কয়েকদিন আগে বিয়ে করেছে। তখন বিয়ের দাবিতে সোহাগের বাড়ির সামনে অবস্থান নিলে সোহাগ সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। 

তরুণী আরও বলেন, সোহাগের পরিবার আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এক পর্যায়ে তারা পুলিশকে ফোন দেয়। পুলিশ এসে আমাকে রাত সাড়ে ৮টায় তাদের ভ্যানে করে থানায় নিয়ে যায়।

ওই তরুণী আরও বলেন, আমার বাবা একজন প্যারালাইজড রোগী। আমার আর কোনো উপায় নেই। সোহাগকে ছাড়া এখন অন্য কাউকে বিয়ে করতেও পারব না। কিন্তু এরই মধ্যে সে গোপনে বিয়ে করেছে। এখন আর তাকে বিয়ে করতে চাইছে না। স্থানীয় দলীয় নেতারাও সোহাগের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এ কারণে বাধ্য হয়ে সোহাগের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সোহাগের পরিবারের কেউ কথা বলতে রাজি হননি। তবে হারাগাছ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমি রংপুরের বাইরে ছিলাম, বেশি কিছু জানি না। বিভিন্নজনের কাছ থেকে তার বাড়িতে এক তরুণীর অবস্থান নেওয়ার কথা শুনেছি। শারাফাত হোসেন সোহাগ কলেজ ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি। যদি তিনি সংগঠন বিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে নিরাপত্তার স্বার্থে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। তিনি বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। আজ তার মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এসপি