পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার মুরাদিয়া আজিজ আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও নারী শিক্ষকের ৯ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় জেলায় ব্যাপক সমালোচনা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে কলেজের অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং স্থানীয়রা বিব্রত।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ৯ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের কল রেকর্ডটিতে শোনা যায়, অধ্যক্ষ আহসানুল হক তার সহকর্মী (একই কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক) শিলা রানীর হালদারকে ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বলছেন, আমার বাসায় গিয়ে আমার সঙ্গে যা করেছ, সেগুলো কি ভিডিও করে সবাইরে দেখাইছ? আর এখন বাইরে সব বলে বেড়াচ্ছ। তোরে আমি অনেক সুযোগ দিছি। তোকে আমি অনেক কিছু দিয়েছি। তুই এখন আর আমার ফোন ধরিস না। এখন তোর অনেক মানুষ হইছে। তুই আর কখনো আমার সামনে আসবি না। আসলে তোর খবর আছে। আর আমি চাইলে তুই এতদিন কলেজে থাকতে পারতি না, তবে তুই কেমনে কলেজে থাকিস তাও আমি দেখে নেব। এছাড়া ওই নারী শিক্ষকের চরিত্র নিয়েও কথা বলেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার আজিজ আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজ গেলে ওই শিক্ষিকাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া তার এবং তার পরিবারের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ রয়েছে। 

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ইমরান বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে আমার বন্ধুরা ফোন করে বিভিন্ন বাজে কথা বলে। এতে করে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আমাদের কলেজের মান-সম্মান শেষ হয়ে যাচ্ছে।

তবে অভিযুক্ত কলেজ অধ্যক্ষ আহসানুল হক বলেন, একটি মহল আমার বিরুদ্ধে এগুলো তৈরি করছে। এটি প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বিরোধী একটি চক্র সামাজিকভাবে আমাকে (অধ্যক্ষ) হেয় করতে অডিও রেকর্ডটি ছড়াচ্ছে। 

ভাইরাল হওয়া কল রেকর্ডের পুরুষ কণ্ঠটি আপনার কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি আমার কণ্ঠ নয়, কলেজের কিছু দুষ্ট চক্র আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটি তৈরি করে ইন্টারনেটে ছড়িয়েছে।

কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আর এ নিয়ে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

এদিকে শিলা রানী হালদারের স্বামী প্রণব ব্যাপারী কল রেকর্ডের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আহসানুল হকের দ্বারা আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। তার কুপরামর্শে আমার সংসার ভাঙার উপক্রম হয়েছে। অধ্যক্ষের অনৈতিক চাপ ও নানা প্রলোভনে শিলা আমার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দিয়ে দূরত্বের সৃষ্টি করেছে।

দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান বলেন, কল রেকর্ডের বিষয়টি আমি শুনেছি। ওই কলেজের বিষয়ে বর্তমানে তদন্ত চলছে। তদন্ত রিপোর্টে বিষয়টি উল্লেখ করা হবে।

এসপি