সিরাজগঞ্জে অবৈধভাবে কাটতে থাকা সেই বিদ্যালয়ের গাছগুলো কাটা বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাকি গাছগুলো আর কাটতে পারেননি বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনায় আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও। কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা সরেজমিন দেখার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। 

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এলিজা সুলতানা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে গাছ কাটা চলা অবস্থাতেই কাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি দু-এক দিনের মধ্যেই বিদ্যালয়ে এসে সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।

তবে কাটা গাছগুলো কেন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নির্দেশনা পাওয়ার আগেই যেকটি গাছ কাটা হয়েছিল সেগুলো করাত কলে নেওয়া হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা বললেন, যেহেতু তারা আগেই গাছগুলো করাতকলে নিয়ে গিয়েছিল তাই আমরা গাছগুলো করাতকলে ওভাবেই অক্ষত রাখতে নির্দেশনা দিয়েছি।

সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এলিজা সুলতানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি জানার পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে তাদেরকে গাছ কাটা বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, গতকাল সারা দিন বৃষ্টি থাকার কারণে এবং আজকে আমাদের একটা প্রশিক্ষণ থাকায় আমি প্রতিষ্ঠানে যেতে পারিনি। তবে আগামীকাল (বুধবার) বিদ্যালয়ে গিয়ে সরেজমিনে দেখে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। 

সিরাজগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশুকাতে রাব্বি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি। এ ছাড়া তারা গাছগুলো করাতকলে নেওয়ার অধিকার রাখে না। যদি সেটা নিয়ে থাকেন তাহলে শিক্ষা কর্মকর্তা কী করছেন আমি সে বিষয়টা দেখছি। 

এ ছাড়া যেহেতু গাছগুলো কেটে তারা অপরাধ করেছে তাই তাদের বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এর আগে সিরাজগঞ্জ সদরের বহুলী ইউনিয়নের খাগা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ২০ বছরের পুরানো লক্ষাধিক টাকার কয়েকটি গাছ নিয়ম না মেনেই কাটতে শুরু করেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। শুধু তাই নয় গাছ কাটার জন্য ভেঙে ফেলা হচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আঞ্চলিক সড়কের কিছু অংশও। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ায় এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে পারছিলেন না কেউ। 

এর প্রেক্ষিতে রোববার (৩১ জুলাই) ‘বিদ্যালয়ের লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নিলেন আ.লীগ সভাপতি’ শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট একটি সংবাদ প্রকাশ করে, যা কর্তৃপক্ষসহ সবার নজরে আসে। 

শুভ কুমার ঘোষ/আরআই