কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিশ্বব্যাংক ও আমেরিকার চক্ষু রাঙানি উপেক্ষা করে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব টাকায় পদ্মা সেতু করেছেন। অথচ দেশের কিছু স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, কতিপয় বুদ্ধিজীবী, কয়েকজন সাংবাদিক আওয়াজ তুলেছিল নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ অসম্ভব। কিন্তু সারাবিশ্বের কাছে আমরা প্রমাণ করেছি নিজের টাকায় বাংলাদেশ পদ্মা সেতু করতে পারে।

বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ঘোলা পানিতে ফায়দা লুটতে চায়। তারা যদি মনে করে থাকে বিদ্যুৎ-জ্বালানির ইস্যু নিয়ে মিছিল সমাবেশ করে সরকার হটাবে, তাহলে তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করছে। দেশের জনগণ বিএনপির সঙ্গে নেই। দেশবাসী বিএনপির অপশাসন এবং দুর্নীতি-লুটপাটের কথা ভুলে যায়নি। 

তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট চলছে। প্রতিটি দেশই মুদ্রাস্ফীতির কারণে অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে। বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়েছে। এজন্য দেশের বিভিন্ন সেক্টরে মৃদু সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে আর কখনো দুর্ভিক্ষ হবে না। আন্তর্জাতিক বাজারে ইউরিয়া সারের দাম বাড়ায় আমরাও দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি। এজন্য কৃষকদের একটু কষ্ট হচ্ছে। সেটা আমরা বুঝি। নিরুপায় হয়েই ইউরিয়ার দাম বাড়াতে হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেই আমরাও ইউরিয়া সারের দাম কমাব।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত কৃষি দরদী। তিনি কৃষক এবং কৃষির উন্নয়নে অসম্ভব আন্তরিক। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষিখাতের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে পদ্মা সেতু। কৃষি অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পদ্মা সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। 

তিনি বলেন, কৃষি ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনার এলাকা বরিশাল। তবে বরিশাল অঞ্চলে কৃষি ক্ষেত্রে কিছু প্রতিকূলতাও আছে। বরিশাল অঞ্চলের মাটি ও পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে। এজন্য কৃষি বিভাগের বিজ্ঞানীরা ধানসহ সব ধরনের ফসলের লবন সহিষ্ণুজাত উদ্ভাবন করেছেন। কৃষি ক্ষেত্রে বরিশালের অতীত গৌরব আবার ফিরিয়ে আনা হবে। বরিশাল হবে বাংলাদেশের শস্য ভান্ডার।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. বেনজির আলম, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবির, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান, জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বরিশালের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলমগীল হোসেন প্রমুখ। কর্মশালায় বরিশাল ও খুলনা কৃষি অঞ্চলের ৪০০ কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর