কুমিল্লায় শিক্ষকের বেত্রাঘাতে মো. সিহাব (১৫) নামের এক মাদরাসাছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৫ আগস্ট) জেলার বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের শশইয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. সিহাব শশইয়া গ্রামের ডিলার বাড়ির শুকুর আলী ডিলারের ছেলে। সিহাব কুমিল্লায় আলোচিত যমজ শিশু পদ্মা ও সেতুর (তাদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে) চাচা।

অভিযুক্ত আব্দুর রব ঝলম ইউনিয়নের মেড্ডা আল মাতিনিয়া নুরানি মাদরাসার শিক্ষক। মারা যাওয়া সিহাব ওই শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে নুরানি শিক্ষা গ্রহণ করছিল।

নিহত সিহাবের ভাবি সাবিকুন নাহার ঝুমুর অভিযোগ করে বলেন, আমার দেবর সিহাবকে কয়েক দিন আগে মেড্ডা মাদরাসার শিক্ষক আব্দুর রব বেত্রাঘাত করেন। এ সময় সিহাব অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষকরা তাকে ওষুধ এনে খাওয়ান। তাতেও সে সুস্থ না হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) মাদরাসা থেকে ফোন করে সিহাবের অসুস্থতার খবর জানানো হয়। পরে আমার শ্বশুর মাদরাসায় গিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। সিহাবের অবস্থা খারাপ হওয়ায় শুক্রবার সকালে তাকে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর দুপুর ১টা ১২ মিনিটের সময় সিহাবের মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, সিহাব প্রথমে বিষয়টি পরিবারকে জানায়নি। সে বলেছে এমনিতেই তার শরীরে জ্বর এসেছে। পরে আজ বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যখন কুমিল্লায় রেফার করা হয়, তখন তার কাছে অসুস্থতার কারণ জোর দিয়ে জানতে চাইলে সে ওই হুজুরের নাম না বলে, বলে হুজুর আমাকে মেরেছে। আমি যদি কাউকে এটা বলি, তাহলে মাদরাসায় ফিরলে আবার আমাকে মারবেন। তাই সে ওই শিক্ষকের নাম বলেনি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য অভিযুক্ত আব্দুর রবের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে তার ফোনে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে একটি খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

মেড্ডা আল মাতিনিয়া নুরানি মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আহমেদ শফি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি সিহাবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। আপনি পরে ফোন করলে খুশি হব বলে তিনি ফোন রেখে দেন।

বিষয়টির সত্যতা জানার জন্য ঝলম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি স্থানীয় মেম্বারের কাছে শুনেছি মাদরাসার একজন শিক্ষক তাকে প্লেট দিয়ে আঘাত করেছেন। মাদরাসায় খোঁজ নিয়ে শুনেছি সিরিয়াস কিছু হয়নি। আমি এখন ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে জেনে বিস্তারিত বলতে পারব।

বরুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফেসবুকে এমন একটি বিষয় দেখার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনএ