হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পঞ্চগড়ে ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে ফিলিং স্টেশন। জেলায় সীমিতভাবে চলছে গণপরিবহন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।

শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে তেলের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণায় শনিবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে পঞ্চগড় জেলার রুটগুলোয় ঢিলেঢালাভাবে চলতে দেখা গেছে গণপরিবহন।

সরেজমিনে দেখা যায়, আগের দিনের তুলনায় সড়কে কম চলছে গণপরিবহন। অনেকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বাস পেয়েছেন। বেশি ভাড়া দিয়েই যেতে হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত জায়গায়, এমন ক্ষোভ যাত্রীদের। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সড়কে ইজিবাইকের পরিমাণ বেশি দেখা গেছে।

এদিকে আজ সকাল থেকে অনেক ফিলিং স্টেশন ক্রেতাশূন্য দেখা গেছে। হঠাৎ পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন ও কেরোসিনের লিটারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে ক্রেতারা আসেননি তেল কিনতে। যে কারণে পাম্পগুলো ফাঁকা দেখা দেখা যায়। 

দুপুরে কথা হয় জেলার তেঁতুলিয়া ফিলিং স্টেশনের কয়েকজন ভোক্তার সঙ্গে।

ভজনপুর এলাকার আব্দুর রশিদ নামের এক মোটরসাইকেল চালক ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুক্রবার রাতে দীর্ঘক্ষণ লাইনে থেকেও তেল নিতে পারিনি। আজ দুপুরে তেল কিনতে এসে নতুন মূল্যে ২০০ টাকার তেল কিনলাম। হঠাৎ তেলের দাম বাড়ায় আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে গেছে। দাম কমানোর দাবি জানান তিনি।

কেশব মণ্ডল রায় নামের আরেক মোটরসাইকেল চালক বলেন, বৃহস্পতিবার পেট্রল ও অকটেন নিলাম কম দামে। হঠাৎ শুক্রবার রাতে দাম বাড়ানোর খবরে হতাশ হয়েছি। এখন ৫০০ টাকায় তিন লিটার পেট্রল নিলাম। আগে ৫০০ টাকায় ৪ লিটারের বেশি পেতাম। আমাদের জন্য খুবই অসুবিধা হয়ে দাঁড়াল। এমন চলতে থাকলে মোটরসাইকেল চালানো দায় হয়ে দাঁড়াবে।

এদিকে তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে হতাশ হয়ে পড়েছেন পাথর ভাঙা মেশিন চালক মিনহাজ উদ্দিনের মতো অনেকেই। তিনি জানান, সীমান্তবর্তী উপজেলা তেঁতুলিয়ায় পাথরনির্ভর পাথর ভাঙা মেশিনে কাজ করে হাজার হাজার মানুষ। তেলের দাম বাড়ানোর কারণে সমস্যা হয়ে দাঁড়াল। তেল ছাড়া মেশিন চলবে না, মেশিন না চলছে বেকার হয়ে পড়বে হাজার হাজার শ্রমিক।

একই কথা জানালেন বাবুল হোসেন নামের একজন হাল ট্রাক্টর চালক। তিনি জানান, জ্বালানি তেলের মাধ্যমে এ ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষ করি। এমনিতে কাজ কাম কম। তার মধ্যে দাম বাড়ায় বিপদেই পড়তে হচ্ছে। এ ছাড়া মাইক্রোবাস, ট্রলি চালকদের সঙ্গে কথা বললে তারাও সৃষ্ট সমস্যার কথা জানান।

জেলার এইচ আর ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার সুজন আলী বলেন, রাতে হুট করেই জানতে পারি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। খবরটি আমার এক বন্ধু জানালে জানাই বিষয়টি জানি না। পাম্পে এসে দেখি লোকে লোকারণ্য। সামাল দেওয়া কষ্ট হয়ে গিয়েছিল। রাত দেড়টা পর্যন্ত তেল দিতে পেরেছি। রাত ১২টার আগে আগের দাম ও পরে নতুন দামে তেল বিক্রি করা হয়েছে।

বিকেলে পঞ্চগড় জেলা বাস-মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বদরুল আলম ঢাকা পোস্টকে জানান, হঠাৎ তেলের দাম বাড়ানোয় আমরা স্তম্ভিত। যে কারণে শনিবার যেসব গাড়িতে তেল মজুত ছিল, সেসব পঞ্চগড়ের বিভিন্ন রোডে চলছে। তবে খুব সীমিত গাড়ি চলছে।

এতে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে তিনি জানান, আগের ভাড়াই বহাল রয়েছে। ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আলোচনা চলছে। তবে রোডে বাস-মিনিবাস বন্ধ হবে না বলে তিনি জানান।

এনএ