জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা গরুর হাট এলাকা থেকে গোখরা সাপের অর্ধশতাধিক বাচ্চা উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে সাপের ওই বাচ্চাগুলো উদ্ধার করে ফরিদপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। 

বিষয়টি খুলনার বন্যপ্রাণি বিভাগীয় কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (১০ আগস্ট) খুলনার বন্যপ্রাণি ইউনিটের একটি দল ফরিদপুর এসে সাপের বাচ্চাগুলোর ব্যাপারে পরবর্তী করণীয় জানাবেন।

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) দুপুরে এক ব্যক্তি ওই সাপের বাচ্চা নিয়ে শহরের টেপাখোলা গরুর হাট এলাকায় টাকা তুলছিলেন। বিষয়টি ওই এলাকার এক তরুণের নজরে আসায় তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন।

সাপের এ বাচ্চা উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেন ফরিদপুর বন বিভাগের ফরেস্টার জাহিদুল ইসলাম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ থেকে বন বিভাগের ঢাকার আগারগাঁস্থ প্রধান কার্যালয়ে সাপের এ বাচ্চা উদ্ধারের বিষয়টি জানানো হয়। পরে ঢাকা থেকে ফরিদপুর বন বিভাগকে বিষয়টি জানান ঢাকার বন্যপ্রাণি ইউনিট। পরে টেপাখোলা গরু হাটে গিয়ে সাপের বাচ্চাগুলো উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, গোখরা সাপের ৪৫ থেকে ৫০টি বাচ্চা হবে। প্রতিটি বাচ্চার দৈর্ঘ্য ১২ ইঞ্চি থেকে ১৪ ইঞ্চি। তবে বাচ্চাগুলোর বয়স কতদিন হবে তা তিনি বলতে পারেননি।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সাপের ওই বাচ্চাগুলো অ্যালুমিনিয়ামের একটি গামলায় এনে টাকা তুলছিলেন ফরিদপুর সদরের চাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে বসবাসকারী মোক্তার খানের ছেলে ইমরান খান (৩৫)।

ইমরান খান জানান, তার পারিবারিক পেশা সাপুড়ে। সামনে মনসা পূজা। এ পূজার শিরনী দেওয়ার জন্য বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা তুলতে হয়। এ জন্য তিনি সাপের এ বাচ্চা দেখিয়ে টাকা তুলছিলেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে চাঁদপুর গ্রাম থেকে খবর পেয়ে একটি বাড়ির গর্ত থেকে এসব সাপের বাচ্চা সংগ্রহ করেন।

২০১২ সালের বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন এর ছয় ধারার ১ তফশিল অনুযায়ী সরীসৃপ জাতীয় প্রাণি হত্যা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ফরিদপুর সদরের রেঞ্জ কর্মকর্তা মীর সাইদুর রহমান বলেন, ইমরান একজন পেশাদার সাপুড়ে। তাকে সদরের চাঁদপুর ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যের জিম্মায় রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে কি আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা বুধবার (১০ আগস্ট) জানা যাবে। পাশাপাশি সাপের বাচ্চাগুলো খুলনার বন্যপ্রাণি ইউনিট নিয়ে যাবে নাকি এখানে কোথাও অবমুক্ত করা হবে সেই বিষয়ে খুলনার  বন্যপ্রাণি ইউনিট সিদ্ধান্ত জানাবে।

জহির হোসেন/এমএএস