প্রতিদিনের মতো আট বছর বয়সী সন্তান ও ছোট ভাইকে নিয়ে মেঘনায় মাছ ধরতে নেমেছিলেন সাগর মাঝি। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল সাগরে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। প্রচণ্ড হাওয়া আর ঢেউয়ে মাছ ধরার নৌকাটি উল্টে যায়।

এরপর তিনজন বিচ্ছিন্ন হয়ে কোথায় গিয়েছিলেন ভেসে, তারও হদিস ছিল না। তবে নৌ-পুলিশের দুই ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে তিনজনই প্রাণে বেঁচে উদ্ধার হয়েছেন।

সাগর মাঝির চোখে-মুখে কৃতজ্ঞতা ফুটে উঠেছে। সবাইকে ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলছিলেন, ভাবছিলাম তিনটা মরদেহ পাইবে, পুলিশ আমাগো প্রাণে বাঁচাইল।

বুধবার (১০ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলা-সংলগ্ন মেঘনা নদীতে।

হিজলা নৌ-পুলিশ ইউনিটের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বিকাশ চন্দ্র দে বলেন, উপজেলার পালপাড়া এলাকার রহিম মীরের ছেলে সাগর মীর (৪০), নাগর মীর (৩৮) এবং সাগর মীরের ৮ বছরের ছেলে সাকিবকে নিয়ে শাওড়া বাজার-সংলগ্ন মূল মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বিকেল ৫টার দিকে প্রচণ্ড ঢেউ এবং বাতাসে নৌকাটি উল্টে যায়।

খবর পেয়ে হিজলা নৌ-পুলিশ ইউনিটের টহল টিম গিয়ে প্রথম অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করে। কিন্তু অপর দুজনের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। মেঘনা নদীতে টানা দুই ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে শিশু ও তার চাচাকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

তিনি আরও বলেন, উদ্ধার করার তিনজনকে আমরা তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তবে মাছ ধরার নৌকাটি স্রোতে ডুবে গেছে। সেটি উদ্ধার সম্ভব হয়নি।

মাঝি সাগর মীর বলেন, বছরের পর বছর আমরা মাছ ধরি। কিন্তু আজকের মতো মেঘনার ভয়াল রূপ কখনো দেখিনি। নৌকাটি উল্টো যাওয়ার পর ভেবেছিলাম পরিবারের কারও মুখ আর দেখা হবে না। ভাবছিলাম তিনজনেরই মরণ হবে। আমার মরদেহ না-ও পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে নৌ-পুলিশের ওসিলায় আমরা জীবিত ফিরছি। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এনএ