ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে সীমান্তের জিরো লাইনে পুকুর খনন করা নিয়ে বিজিবির ওপর হামলার ঘটনায় ৫৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। গত সোমবার (৮ আগস্ট) রাতে উপজেলার দানাজপুর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এতে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৩০ জনকে। বুধবার (১০ আগস্ট) মামলার বিষয়টি জানাজানি হয়। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

মামলা সূত্রে  জানা যায়, গত ২১ জুলাই বিকেলে পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট ইউনিয়নের দানাজপুর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হারুন, নায়েব বুলবুল এবং আরও দুইজন বিজিবি সদস্য সীমান্তের চন্দ্রা এলাকায় টহল দেওয়ার সময় দেখতে পান সীমান্তের ৩৩৯ এর ২ এস পিলারের কাছে জনৈক ইসমাইল হোসেন এক্সকাভেটর দিয়ে পুকুর খনন করছেন। সীমান্তের জিরো লাইনে পুকুর খনন করা নিষিদ্ধ হওয়ায় বাধা দেন তারা। এ নিয়ে বিজিবির সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন ইসমাইল। তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার লোকজনকে খবর দেন। মুহূর্তেই অনেক লোক ঘটনাস্থলে এসে বিজিবি সদস্যদের ঘেরাও করে এবং মারপিট করতে থাকে। একপর্যায়ে ক্যাম্প কমান্ডার হারুনের সঙ্গে থাকা ৩০ রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিনসহ একটি এসএমজি বাট নং ৮২ এবং সিপাহী আকাশের নিকট থাকা চায়না বাট নং ১৮৪ রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে বিজিবি সদস্যদের ধাক্কাধাক্কি করে পার্শ্ববর্তী জনৈক মান্নানের বাড়িতে নিয়ে যায় এবং একটি ঘরে আটক করে রাখে। 

বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার হারুন বিষয়টি মোবাইল ফোনে অন্যান্য বিজিবি সদস্যদের জানানোর চেষ্টা করলে ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে এবং সিপাহী আকাশকে ঘর থেকে বের করে বারান্দায় এনে বাঁশের খুঁটিতে রশি দিয়ে বেঁধে মারপিট করে এবং অন্য বিজিবি সদস্যদের ঘরের ভেতরে তালা দিয়ে রাখে।

ইউপি সদস্য হারুন ও ইসমাইলের লোকজন বিজিবি সদস্যদের পোশাক ধরে টানাহেঁচড়া করে। এতে ক্যাম্প কমান্ডার হারুনের র‌্যাঙ্ক ব্যাজ ছিঁড়ে যায়। পরে বিজিবির অন্য সদস্যদের আসতে দেখে তারা সেখানে গুলি ও অস্ত্র ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। বিজিবির অন্য সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। পরে সরকারি গাড়ি যোগে তাদের দিনাজপুর বিজিবির সদর দপ্তরে এমআই রুম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

এ বিষয়ে পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিজিবির ওপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

এম এ সামাদ/আরএআর