‘দুই মেয়েকে নিয়ে এখন কোথায় যাব, কী খাওয়াব’
বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের বারান্দায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত স্বামীর মরদেহের পাশে আহাজারি করছিলেন রাবেয়া বেগম নামে এক নারী। বাবা বাবা বলে অঝোরে কাঁদছিল সাত বছর বয়সী মেয়ে চাঁদনী। মা-মেয়ে ও স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ।
শনিবার (১৩ আগস্ট) বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুরে কর্মরত অবস্থায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. নাদিম হোসেন (২৮) নামে ওই রাজমিস্ত্রির মৃত্যু হয়। সংসারের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে কিছুতেই কান্না থামছে না নাদিমের স্ত্রী রাবেয়া বেগমের।
বিজ্ঞাপন
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাবেয়া বলেন, আমার তো যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। স্বামীই আমার সব ছিল। নিজেদের থাকার জায়গাও নেই, ভাড়া বাড়িতে থাকি। এক মেয়ের বয়স সাত, ছোট মেয়ের বয়স ১৫ মাস। এখন ছোট ছোট দুই মেয়েকে নিয়ে আমি কোথায় যাব। ওদের কী খাওয়াব।
নিহত নাদিম হোসেন যাত্রাপুর এলাকার দুলাল শেখের ছেলে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যাত্রাপুর এলাকার ব্যবসায়ী দিপঙ্করের ভবনে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। এ সময় মো. কামরুল (৩২) নামের আরেক রাজমিস্ত্রি গুরুতর আহত হয়েছেন। বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কামরুলকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কবির হোসেন বলেন, সকাল থেকে নাদিম, কামরুলসহ আমরা চারজন যাত্রাপুর এলাকার দিপঙ্করের ভবনে কাজ করছিলাম। সাড়ে ১১টার দিকে কলাম তৈরির জন্য ফর্মা ওঠাচ্ছিলেন নাদিম হোসেন। এ সময় বিদ্যুতের তারে ফর্মা লেগে নাদিম ও কামরুল গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে দুইজনকে দ্রুত বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসি আমরা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাদিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় আনোয়ার শেখ বলেন, নাদিমের আয়ে চলত চারজনের সংসার। দুই সন্তান নিয়ে কীভাবে বাঁচবে নাদিমের স্ত্রী। যার বাড়িতে কাজ করছিলেন তার পক্ষ থেকে এবং সরকারিভাবে নাদিমের পরিবারকে সহযোগিতার দাবি জানান তিনি।
বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. গোলাম রাফি বলেন, দুপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত দুইজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তার মধ্যে নাদিম নামে একজনকে মৃত অবস্থায় হাসাপাতালে আনা হয়। অন্যজন কামরুলও গুরুতর আহত ছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তানজীম আহমেদ/আরএআর