অভাবের তাড়নায় একমাত্র ছেলেকে হাটে বিক্রি করতে নিয়ে যাওয়া মা সোনালি চাকমাকে সঞ্চয়পত্র করার জন্য এক লাখ টাকার চেক তুলে দিয়েছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস।

এ ছাড়া তাকে দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি আধাপাকা সরকারি ঘর করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে ছেলে রামকৃষ্ণ চাকমার (৬) ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে তাকে জেলা সরকারি শিশু পরিবারে থাকার ব্যবস্থা করা হবে।

রোববার (১৪ আগস্ট) খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সোনালী ও ছেলে রামকৃষ্ণকে সরকারি এসব সহায়তা প্রদান করার কথা জানান জেলা প্রশাসক। এ সময় তিনি মানবিক বিষয়টি তুলে আনার জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার, খাগড়াছড়ি জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম ও ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুজন চাকমা, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি জীতেন বড়ুয়া ও খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরীসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন : স্বামী ছেড়ে গেছেন, অভাবে সন্তানকে বাজারে বিক্রি করতে এসেছেন মা

পরিবার ও প্রতিবেশীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সোনালী চাকমার মেডিকেল টেস্ট করানোর কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, যদি তিনি মেডিকেল টেস্টে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলে প্রমাণিত হন, সে ক্ষেত্রে তাকে সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা হবে।

সংবাদ প্রকাশের পর সোনালী চাকমার সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছি জানিয়ে প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, তিনি (সোনালী) খুবই অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। তার এই অসহায়ত্বে আমরা তার পাশে দাঁড়িয়েছি। পাশাপাশি তার ছেলের দায়িত্বও আমরা নিয়েছি।

প্রসঙ্গত, ১১ আগস্ট খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়ার পাকুইজ্জ্যাছড়ি বাসিন্দা সোনালী চাকমা তার একমাত্র সন্তানকে বিক্রির জন্য খাগড়াছড়ি বাজারে তোলেন। দাম হাঁকেন ১২ হাজার টাকা। পরে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে কমলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল জীবন চাকমা এসে শিশুকে রক্ষা করেন।

ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে আলোচনার ঝড় ওঠে। খবর পেয়ে পরিবারটির জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে ছুটে যান সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা। এরপর ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অনেকেই সাহায্য নিয়ে আসছেন।

মো. জাফর সবুজ/এনএ