বাগেরহাট সদর উপজেলার নোনাডাঙ্গা গ্রামের চাষি জাহিদুল ইসলাম। খানজাহান আলী মাজার-চিতলমারী সড়কের পাশে জমি বর্গা নিয়ে মাছ চাষ করেন। মাছে তেমন লাভ না হওয়ায় ঘেরের পাড়ে চাষ করেছেন তরমুজ। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। বিক্রি শুরু করেছেন স্থানীয় বাজারে।

কিন্তু সোমবার (১৫ আগস্ট) সকালে ক্ষেতে এসে নির্বাক হয়ে যান তিনি। কোথাও কোনো তরমুজ নেই। রাতের আধারে দুর্বৃত্তরা উপড়ে ফেলেছে সব গাছ, নষ্ট ও চুরি করে নিয়ে গেছে ফলন্ত সব তরমুজ। এতে প্রায় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে তার। এখন সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

চাষি জাহিদুল ইসলাম বলেন, রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত ঘেরে কাজ করে বাড়িতে যাই। সকালে এসে দেখি তরমুজের গাছগুলো কারা যেন উপড়ে ফেলেছে। আর মাচায় থাকা তরমুজগুলো চুরি করে নিয়ে গেছে। আর যেগুলো নিতে পারেনি, তা মাঝ দিয়ে কেটে নষ্ট করে দিয়ে গেছে। আমি চার মাস আগে কষ্ট করে ঘেরের পাড়ে ৬০০ তরমুজের গাছ লাগাই। এই গাছ থেকে উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি করেই সংসারের ভরণ-পোষণের চিন্তা ছিল। কিন্তু গাছ কেটে দেওয়ায় আমার লাখ টাকার ক্ষতি হয়ে গেল। এই ক্ষতি আমি কীভাবে পুষিয়ে উঠব?

জাহিদুলের মা কোহিনুর বেগম বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে ফসল ফলাই। রাত-দিন খেটে মাত্র তরমুজ বিক্রি শুরু করেছিলাম। এর মধ্যেই আমাদের এত বড় ক্ষতি করে দিল। নাতি-নাতনির পড়াশোনা, সংসার খরচ এখন কীভাবে চলবে বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

প্রতিবেশী আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার বলেন, সুন্দর-সুন্দর তরমুজ ঝুলত মাচায়। আগের দিনও ১৮০ টাকা দিয়ে একটি তরমুজ কিনেছিলাম। খেতেও অনেক স্বুসাদু। আজ এসে দেখি কোনো তরমুজ নেই, গাছ সব উপড়ে ফেলা হয়েছে। নিরীহ কৃষকের এমন ক্ষতি চরম অন্যায়। কৃষির ওপর নির্ভর করেই চলত পরিবারটি। দুর্বৃত্তদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেন তিনি।

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুর রহমান বলেন, নোনাডাঙ্গা এলাকার এক চাষির ক্ষেতের তরমুজ চুরি ও গাছ উপড়ে ফেলার ঘটনা শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তানজীম আহমেদ/এসপি