‘তুমরার কাছে আমি ভিক্ষা চাই। আমারে দেশে ফিরাইয়া নেও’ আকুতি জানিয়ে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছিলেন হবিগঞ্জের শিল্পী আক্তার নামে এক তরুণী। এ নিয়ে ঢাকাপোস্ট একটি প্রতিবেদন করে। ফলে বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপে দেশে বাবা-মায়ের কাছে ফিরতে পেরেছেন শিল্পী। দীর্ঘ ৩ বছর পর সোমবার (১৫ আগস্ট) তিনি চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের তেইগাঁও গ্রামে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন।

মঙ্গলবার বিকেলে শিল্পী আক্তারের বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে কথা হ্য় ঢাকা পোস্টের এ প্রতিবেদকের। এ সময় তার বাড়িতে আনন্দঘন পরিবেশ লক্ষ করা গেছে।

শিল্পী আক্তার সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, দূতাবাস ও বাংলাদেশ সরকারের কারণেই আমি মৃত্যুকূপ থেকে ফিরে আসতে পেরেছি।

নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে শিল্পী আক্তার বলেন, আমি সেখানে গাসিম নামে একটি এলাকায় থাকতাম। যে বাড়িতে থাকতাম, সেখানে মালিক, তার বউ ও ছেলে-মেয়েরা সব সময় আমাকে মারধর করতেন। মালিক আমাকে লাঠি দিয়ে পেটাতেন। খাবার দিতেন না। মালিকের স্ত্রী মারপিটের পাশাপাশি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন। এমনকি বাবা-মায়ের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে দিতেন না। মা-বাবার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মারধর করতেন।

মাস শেষে বেতনের কথা বললেও নির্যাতন করা হতো জানিয়ে শিল্পী আক্তার বলেন, দেশে আসার সময় আমার মালপত্র সব রেখে দিয়েছেন মালিকের বউ। সামান্য কয়েকটা কসমেটিকস ছিল, সেগুলোও রেখে দিয়েছেন।

শিল্পী আক্তারের বাবা আব্দুল মজিদ ও মা নূর চান বিবি সরকার ও সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তারা বলেন, আমাদের মেয়ের ওপর সৌদি আরবে নির্যাতনের খবর পেয়ে আমরা খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তারপর বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করার পর মেয়ে ফিরে আসায় আমরা খুব আনন্দিত।

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, মেয়েটি দেশে তার বাবা-মার কাছে ফিরে এসেছে জেনে খুবই ভালো লাগছে। সৌদি আরবে নির্যাতনের ঘটনা জানার পর পরই প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি।

এসপি