ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রবাসীদের সঙ্গে মোবাইলে প্রেমের পর ডেকে নিয়ে অশ্লীল ভিডিও ধারণা করে টাকা আদায় করে আসছিল একটি চক্র। অবশেষে সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের গৌতমপাড়া থেকে ওই চক্রের নারী-পুরুষসহ ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। 

বুধবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অর্থ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন।

আটককৃতরা হলেন- ঘাটুরা এলাকার রেনু মুন্সির ছেলে আব্দুল আহাদ (৩৪), তার স্ত্রী ববিতা বেগম (৩০), মধ্যপাড়ার রবি বাবুর্চির ছেলে সাজন (৩১), সদর উপজেলার মজলিশপুরের কবির মিয়ার মেয়ে লিপি আক্তার (১৮), ভাদুঘর এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মশিউর রহমান (৪৩) ও শেরপুর এলাকার খায়রুল ইসলামের স্ত্রী জুহুরা বেগম (২২)।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, গত ১৫ আগস্ট সরাইল উপজেলার অরুয়াইলের প্রবাসী শাকিল মিয়াকে অপহরণ করে একটি চক্র মুক্তিপণ দাবি করে। পরে তার পরিবারের সদস্যরা বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা অপহরণকারীদের পাঠালে আরও টাকা পাঠানোর জন্য বলে। না দেওয়ায় তাকে মারধর করে। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানান। এর পরদিন একই এলাকার আরেক প্রবাসী সোবহান মিয়াকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে দুটি নম্বরে কয়েকটি ধাপে ৬০ হাজার টাকা আদায় করেন অপহরণকারীরা।

পরে ১৬ আগস্ট বিকেলে অপহৃত দুই প্রবাসীকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। দুজন ফিরে এসে ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলেন। তারা জানান, মেয়েদের মাধ্যমে মোবাইল প্রেমের ফাঁদ ফেলে এই চক্র। পরে দেখা করার কথা বলে তাদের অপহরণ করে আটকে রাখা হয়। এ সময় উলঙ্গ করে ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। পরিবারকে টাকা দিতে বলে।

পরে মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভুক্তভোগীদের নিয়ে অভিযান শুরু করে সরাইল থানা পুলিশ। অভিযানে সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গৌতমপাড়া থেকে এই চক্রের ছয়জনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মামলা করা হবে। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন আরও জানান, এই চক্রের উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রবাসীদের ফাঁসিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে নেওয়া। এই চক্রের সাংবাদিক পরিচয়ধারী (সহ-সম্পাদক তিতাস বার্তা) মশিউর রহমানের মোবাইলে অনেকগুলো অশ্লীল ভিডিও পাওয়া গেছে। অপর অপরাধী সাজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে সাতটি মামলা রয়েছে। 

আরএআর