খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ভাতার কার্ড অনলাইনে নিবন্ধনের জন্য সুবিধাভোগীদের কাছে পঞ্চাশ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ইউপি চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি জানাজানির পর ইউপি সদস্যদের প্রতিবাদের মুখে মাইকিং করে সেই পঞ্চাশ টাকাসহ যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত আরও ২০ টাকা করে সুবিধাভোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আয়মারসূলপুর ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) এমন ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের নামের তালিকা অনলাইনে নিবন্ধন করার জন্য সরকারি খরচে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নিবন্ধন করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু তাদের ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে অনলাইনে নিবন্ধন করার কথা বলে ৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। ইউপি চেয়ারম্যান মামুনূর রশীদ মিলটনের চাচাতো ভাই রিগ্যান হোসেন এই টাকা নিয়েছিলেন। সুবিধাভোগীরা টাকা আদায়ের কথা সাতজন ইউপি সদস্যকে জানান।

ইউপি সদস্যরা জানান, বিষয়টি জানতে পেরে দেনদরবার করে তারা রিগ্যানের কাছ টাকা ফেরত নেন। সেই ৫০ টাকাসহ যাতায়াত ভাড়া বাবদ আরও ২০ টাকা করে সুবিধাভোগীদের ফেরতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার ইউপি এলাকায় মাইকিং করা হয় এবং বুধবার সকাল থেকে ইউপি কার্যালয়ের উদ্যোক্তা কক্ষ থেকে ফেরত দেওয়া শুরু করা হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত এই টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

ওই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নাজমুল হোসেন বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীরা সবাই গরিব-দুস্থ। অনলাইনে নিবন্ধনের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে আদায় করেছিলেন। আমরা দেনদরবার করে তার কাছ থেকে টাকা আদায় করেছি। মাইকিং করে সেই টাকাসহ যাতায়াত ভাড়া বাবদ আরও বিশ টাকা করে বেশি ফেরত দেওয়া হচ্ছে।

ভাতাভোগী বিরিঞ্চি গ্রামের পরিমল, খাসবাট্টা গ্রামের নেহাল উদ্দিন, মৃধাপাড়া গ্রামের হাছেন আলীসহ অনেকেই বলেন, চেয়ারম্যানের ভাই রিগ্যান আমাদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে নিয়েছিলেন। পরে শুনি টাকা লাগবে না, তাই মেম্বাররা আমাদেরকে ডেকে আরও ২০ টাকা বেশি দিয়ে টাকা ফেরত দিয়েছেন।

টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই রিগ্যানকে বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি এখন ব্যস্ত আছি। এ ছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মামুনূর রশিদ মিলটনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরমান হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি জেনেছি। আমরা তদন্ত করে দেখছি। যদি কেউ দোষী থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চম্পক কুমার/আরআই