কুষ্টিয়ার মিরপুরে বৃষ্টি খাতুন (৩০) নামে এক নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে তার প্রেমিকসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদেরকে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মিরপুর উপজেলার কচুবাড়িয়া গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ ওরফে মঞ্জু, একই গ্রামের আবু মন্ডলের ছেলে হেলাল উদ্দিন ও মৃত হাসেম আলীর ছেলে আশরাফুল আলম।

রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পরই তাদেরকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর ৯ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১ জুলাই সকালে খালার বাড়িতে বেড়াতে যান বৃষ্টি খাতুন। পরে দিন ২ জুলাই বিকেলে খালার বাড়ি থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হন বৃষ্টি। নিখোঁজের পর দিন ৩ জুলাই সকালে মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামে মিরপুর-দৌলতপুর সড়কের পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত শাহাবুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৃষ্টি খাতুনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রেমের সম্পর্কের কারণে বৃষ্টির কাছে থেকে টাকা ধার নেন শাহাবুদ্দিন। এরপর বৃষ্টি টাকা ফেরত চাইলে তাকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করেন শাহাবুদ্দিন এবং তার বন্ধু আশরাফুল ও হেলাল। 

এ ঘটনায় ওই দিনই নিহতের বাবা আমিন বিশ্বাস আসামিদের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে ২৪ আগস্ট রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত তারিখে আদালতের বিচারক মামলার তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৯ আসামিকে খালাস দেন। 

আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, বৃষ্টি খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর ৯ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

রাজু আহমেদ/আরএআর