সিলেটে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে আটজন নিহত হয়েছেন / ছবি : ঢাকা পোস্ট

সিলেটের ওসমানীনগরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রশিদপুর এলাকায় সকালে এনা পরিবহন ও লন্ডন এক্সপ্রেস নামে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে আটজন নিহত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও সাতজন। দুর্ঘটনার পর প্রায় আধা ঘণ্টা যাত্রীরা বাসে আটকা ছিলেন বলে জানা গেছে। এরপর স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।

দুর্ঘটনাকবলিত লন্ডন এক্সপ্রেস বাসের যাত্রী শেখ মো. রাহেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি লন্ডন এক্সপ্রেস বাসে ব্রাক্ষণবাড়িয়া যাচ্ছিলাম। আমার সামনের দুজন যাত্রী মারা গেছেন। দুর্ঘটনার পর আমরা আধা ঘণ্টা বাসের ভেতরে আটকে ছিলাম। এরপর স্থানীয়রা আমাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।

লন্ডন এক্সপ্রেসের অপর যাত্রী শেখ লুৎফুর রহমান বলেন, লন্ডন এক্সপ্রেস বাসটি এনা পরিবহনের বাসকে ওভারটেক করে প্রায় বেরিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে এনা বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারায় ও দুই বাসের সংঘর্ষ হয়।

এনা বাসে থাকা যাত্রী সামাদ হোসেন বলেন, দুই বাসের ড্রাইভারের বসার যে অংশ ওই দুই অংশেই ধাক্কা লেগেছে। এজন্য বাসের সামনে যারা ছিলেন তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। লন্ডন এক্সপ্রেস বাসটি প্রায় বেরিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক ওই মুহূর্তে এনা বাসটি কোণায় ধাক্কা দেয়।

কয়েকজন আহত যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুরু থেকেই লন্ডন এক্সপ্রেস বাসকে যাত্রীরা ধীরে চালানোর জন্য বলে আসছিল। কিন্তু চালক তা না শুনে বেপরোয়াভাবে বাস চালাচ্ছিলেন। যখন দুটি বাস প্রায় মুখোমুখি চলে আসে তখন দুই চালকই বাস সাইড করতে চেয়েছিলেন। তবে নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে দুই বাসের চালক যেখানে বসেন সেখানকার কোণায় ধাক্কা লাগে। 

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আলীম বলেন, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে খুব জোরে একটি আওয়াজ শুনতে পাই। এসে দেখি বাস দুটির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এরপর যে যাকে পেরেছি বাসের ভেতর থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেছি।  

এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট আটজন মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১৯ জন। তার মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

নিহতরা হলেন- সিলেটের উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক আল মাহমুদ সাদ ইমরান খান (৩৩), এনা পরিবহনের বাসচালক ওসমানীনগর উপজেলার ধরখা গ্রামের মঞ্জুর আলী (৩৮), সুপারভাইজার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিঠাভরা গ্রামের সালমান খান (২৫), হেলপার ধরখা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন (২৪), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার রাজানিয়াকান্দি পশ্চিম পাড়ার নুরুল আমিন (৫০), ঢাকার ওয়ারী এলাকার নাদিম আহমদ সাগর (২৯), সিলেট নগরের আখালিয়া এলাকার শাহ কামাল (২৭) ও সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বাংলা বাজার এলাকার রহিমা বেগম (২৬)।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডা. রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা গেছেন। এর আগে সাতজন মারা যান। তাদের মধ্যে চারজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। আর হাসপাতালে আসার পর আরও তিনজনের মৃত্যু হয়।

দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত দুটি বাস রেকার দিয়ে আমরা থানায় এনেছি। এখন পর্যন্ত আটজন। মারা গেছেন 

তুহিন আহমদ/আরএআর