চা-শ্রমিকদের মজুরি দৈনিক ৩০০ টাকা বৃদ্ধির দাবিতে মৌলভীবাজার জেলার অধিকাংশ বাগানে চলছে ধর্মঘট। গতকাল বেশ কয়েকটি চা-বাগানে শ্রমিকরা পাতা উত্তোলন করলেও আজ কাজে যোগ দেননি শ্রমিকরা। 

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে মৌলভীবাজারের শহরের বেরিরপাড় পয়েন্টে মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন চা শ্রমিকরা। এ ছাড়া জুড়ী উপজেলার রাজনগর কলেজ পয়েন্টের আঞ্চলিক মহাসড়ক‌ও ঘেরাও করে রেখেছেন শ্রমিকরা। 

মৌলভীবাজারের দেওরাছড়া, মাঝদিহি, মৌলভী, হামিদিয়া ও প্রেমনগর চা বাগানের শ্রমিকরা এই বিক্ষোভে অংশ নেন। মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় দুই হাজার চা শ্রমিক অবরোধ করেন। এতে কয়েক হাজার ছোট-বড় যানবাহন আটকে আছে। ঘণ্টাব্যাপী অবরোধে প্রচণ্ড গরমে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সকাল থেকেই জেলার বালিশিরা, মনু, ধলাই, জুড়ি, লংলার অধিকাংশ বাগানে শ্রমিকরা কাজে আসেননি। মালিক পক্ষ জানিয়েছেন, শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে প্রতিদিন শিল্পের লোকশান হচ্ছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। 

দেওরাছড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সুবুধ কুর্মী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কথা বলে তাদেরকে ধোকা দেওয়া হচ্ছে। তারা এ সিদ্ধান্ত মানেন না। নেতাদের কথা আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাদের বলবেন, আমাদের মজুরি বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী না বলা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে ফিরব না। 

প্রসঙ্গত, দেশের ১৬৭ চা-বাগানে শ্রমিকের সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি। বর্তমানে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা। গত ৯ আগস্ট এ আন্দোলন শুরু হয়। শুরুতে প্রথম কয়েকদিন কেবল ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। সে সময় মজুরি বৃদ্ধি ও মজুরি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সাত দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়। 

কিন্তু মালিক পক্ষ এ সময়ের মধ্যে বৈঠক বা সমঝোতায় না আসায় ১৩ আগস্ট থেকে লাগাতার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা। এরপর দফায় দফায় বৈঠক করেও এখন পর্যন্ত কোনো সঠিক সমাধানে যায়নি এই সংকট। 

ওমর ফারুক নাঈম/আরআই