ফরিদপুরে জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে একটি বিদ্যালয়ের মাঠ ব্যবহার করা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। এ বিরোধের জেরে ওই স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এবং ফরিদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক শামসুল হক ভোলা জেলা সদরের চারমাধবদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলামকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর বিদ্যালয়ের ওই মাঠেই জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, মিলাদ, দোয়া ও গণভোজের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা চরমাধবদিয়া ময়েজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠান করার জন্য মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ওই সময় বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শামসুল হক বিদ্যালয়ে ছিলেন। এ আয়োজন দেখে তিনি এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি নজরুলের কাছে এ ঘটনার ব্যাখ্যা চান। এরই এক পর্যায়ে শামসুল হক নজরুলকে মারধর করেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চরমাধবদিয়া ময়েজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দুটি মাঠ রয়েছে। একটি ছোট ও একটি বড়। চরমাধবদিয়া  ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার আউয়াল হাসান অনুষ্ঠানের জন্য স্কুল ভবন সংলগ্ন ছোট মাঠটি ব্যবহারের অনুমোদন চান। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভবন সংলগ্ন আঙ্গিনার জায়গায় অনুমতি না দিয়ে সামনের বড় মাঠে এ অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেন।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রশাসক শামসুল হক ভোলা বলেন, এই স্কুলের সভাপতি আমি। আমি জেলা পরিষদের প্রশাসক, আমি আওয়ামী লীগ করি, আমার বাড়ি এখানে। এই স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগ অনুষ্ঠান করবে, আমাকে জানাবে না? তিনি অভিযোগ করেন, অনেক জুনিয়রদের এই অনুষ্ঠানে অতিথি করা হয়েছে, আমাকে জানানোই হয়নি। 

নজরুলকে মারধরের কথা স্বীকার করে শামসুল হক বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত অমান্য করেছে আয়োজক কমিটি। আমরা বড় মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলাম। সে জায়গায় অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে স্কুলের সীমানা প্রাচীরের মধ্যে অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বার বার বলার পরও আমাদের অনুমতি দেওয়া জায়গায় অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে স্কুলের সীমানা প্রাচীরের মধ্যে আয়োজনের উদ্যোগে আমি ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে (নজরুল) চড়-ধাপ্পড় মারি।

চরমাধবদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে ১৫ আগস্টে নিহত জাতির জনকসহ অন্যান্যদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা আয়াজনের জন্য প্যান্ডেল করছিলাম। সেখানে শামসুল হক এসে বাধা দিয়েছে। কেন বাধা দিয়েছে সেটা জানতে আসি। আমি আসার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমাকে কিল, ঘুষি চর-থাপ্পড় মারা শুরু করেন। 

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই এ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি চলছে।

জহির হোসেন/আরআই