রংপুরের ঐতিহাসিক পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ ও টাউন হল চত্বর এখন জলমগ্ন। মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠের বুকে থাকা রংপুর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশও পানি ছলছল করছে। বাদ পড়েনি মাঠের আশপাশ। 

শনিবার (২৭ আগস্ট) বেলা পৌনে ৩টা থেকে প্রায় ৪টা পর্যন্ত টানা এক ঘণ্টারও বেশি সময় রংপুর নগরীতে বৃষ্টি হয়েছে। আর এতেই পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ ও টাউন হল চত্বরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

নগরীর সচেতন মহল ও সংস্কৃতিকর্মীরা বলছেন, পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ ও টাউন হল চত্বরের
অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এমনটা হয়ে আসছে। এ নিয়ে বহুবার জেলা প্রশাসক ও সিটি করপোরেশনকে জলাবদ্ধতা নিরসনে মাঠ উঁচু করার জন্য দাবি জানিয়েও কাজ হয়নি বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তারা।

এদিকে জলাবদ্ধতার কারণে রংপুর টাউন হল চত্বর ও পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে আগত দর্শনার্থী ও সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জনসমাগম মুখর টাউন চত্বরে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় একটু ভিড় বেশি থাকে। এছাড়া টাউন হলের পাশে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে বিভিন্ন সংগঠনের সভা/সেমিনারের কারণে শুক্রবার বিকেল থেকেই মানুষের ভিড় ছিল অন্যদিনের তুলনায় বেশি। কিন্তু হঠাৎ এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে পুরো এলাকা এখন জলমগ্ন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সংস্কৃতিকর্মীসহ দর্শনার্থীদের। বিশেষ করে শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমিতে ক্লাস করতে আসা বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং চত্বরে বিভিন্ন সংগঠনের নাটকের মহড়ায় আসা নাট্যকর্মীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

 

জলাবদ্ধতার কারণে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে এবং টাউন হল চত্বর মাঠে চলাফেরা করতে পারছেন না কেউ। এতে সাময়িক বিড়ম্বনা সৃষ্টি হলেও প্রায়ই এমন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ সেখানকার সংগঠনগুলোর নেতাদেরও। 

সাহিত্য পত্রিকা মৌচাকের সম্পাদক রেজাউল করিম জীবন বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে আমরা জলমগ্ন পরিবেশে এখানে যাতায়াত করছি। এতে শহিদ মিনার ও টাউন হল চত্বরের বেহাল অবস্থা ফুটে উঠেছে, যা খুবই কষ্টকর। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের অনেকবার অবগত করা হয়েছে। কিন্তু কারও কোনো প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নেই।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রংপুর মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, এক-দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ঐতিহাসিক পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ এবং টাউন হল চত্বরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যদি টানা কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি হয় তাহলে কী অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে, সেটাও আমরা দেখেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণে আমরা কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখছি না। এখন মাঠ জলমগ্ন, পানিতে থই থই করছে।

তিনি আরও বলেন, শহিদ মিনারের পাদদেশেও পানি। ড্রেন আছে কিন্তু পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা দুর্বল। এর দায় তো মাঠ কর্তৃপক্ষ এড়িয়ে যেতে পারে না।

এ ব্যাপারে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, পাবলিক লাইব্রেরি মাঠটি জেলা প্রশাসনের। এটির উন্নয়ন, সংস্কারসহ অন্যান্য বিষয়গুলো প্রশাসনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আমরা সিটি করপোরেশন থেকে জাতীয় দিবসগুলোতে শুধু শহিদ মিনার ধুয়ে মুছে পরিষ্কার, আলোকসজ্জা ও দেখভাল করে থাকি। 

মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রসঙ্গে জানতে জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর