ইমাম মেহেদী হাসান ডলার

‘উঠিয়ে নেওয়া’র সাড়ে ৯ মাস পর পরিবারের কাছে ফিরলেও সপরিবারে অনেকটা আত্মগোপনে চলে গেছেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার ব্যবসায়ী ইমাম মেহেদী হাসান ডলার। ফুলবাড়িয়ার জোরবাড়িয়ায় গ্রামের বাড়ি কিংবা ফুলবাড়িয়া পৌর এলাকার বাসাতেও থাকছেন না তিনি ও তার স্ত্রী-সন্তানরা। গত শনিবার ভোরে মেহেদি বাসায় ফিরলেও বিষয়টি জানাজানি হয় গতকাল সোমবার রাতে।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে ডলারের বাসায় গিয়ে পাওয়া যায় তার বাবা লাল মাহমুদকে। ছেলে ফিরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও ব্যাপারটি নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নন তিনি। 

লাল মাহমুদ বলেন, আমার ছেলেকে যে ফিরে পেয়েছি, এতেই আলহামদুলিল্লাহ। কারা নিয়ে গেছে, কেন নিয়ে গেছে এবং কে দিয়ে গেছে- এসব বিষয়ে কিছুই আমাদের বলতে পারছে না আমার ছেলে। এ ব্যাপারে সে কারও সঙ্গে কথা বলতেও চায় না। শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় সে বিশ্রামে আছে। 

মেহেদী হাসান এখন কোথায় আছেন জানতে চাইলে তার বাবা বলেন, বাসায় থাকলে লোকজন আসবে, তাই সে ময়মনসিংহ শহরে তার শ্বশুরের বাসায় চলে গেছে। শারীরিকভাবে সুস্থ হলে বাসায় ফিরবে। 

ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, মেহেদী হাসান ডলার ফিরে এসেছে এটি গতকাল সোমবার থেকে আমরাও শুনছি। তবে ফিজিক্যালি আমরা তাকে পাইনি কিংবা পরিবারের পক্ষ থেকেও কেউ কিছু জানায়নি। তাদের কাছ থেকে লিখিত পেলে আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারব।

গত বছরের ৬ নভেম্বর ফুলবাড়িয়া উপজেলার ছনকান্দা থেকে নিখোঁজ হন মেহেদী। এর দুদিন পর ৮ নভেম্বর মেহেদীর বাবা লাল মাহমুদ ফুলবাড়িয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

প্রথম থেকেই মেহেদীর স্ত্রী মোমতাহেনা পিংকীর অভিযোগ ছিল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে মেহেদী হাসানকে তুলে নিয়ে গুম করা হয়েছে। 

গত বছর ১৭ নভেম্বর ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবে এবং পরে এ বছরের ৪ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে স্বামীর সন্ধান চান মোমতাহেনা।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, ৬ নভেম্বর ফুলবাড়িয়ায় নিজেদের মাছের খামার থেকে বাড়ি ফেরার সময় তার স্বামী ইমাম মেহেদী হাসান নিখোঁজ হন। প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে তিনি জানতে পারেন, ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে একটি সাদা মাইক্রোবাস ও দুটি মোটরসাইকেলে একদল লোক মেহেদী হাসানকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।

উবায়দুল হক/আরআই