হঠাৎ ১৯৯৭ সালে খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৫ আগস্ট হলো : তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের প্রবৃদ্ধি যখন ৯.৫৪ শতাংশ, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যখন সমস্ত ষড়যন্ত্র সামাল দিয়ে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই দেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করার প্রচেষ্টাস্বরূপ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলো।
বুধবার (৩১ আগস্ট) রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের আলী আহাম্মেদ চুনকানগর মিলনায়তনে জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাৎবার্ষিকী এবং প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার জন্য গঠিত সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বাংলাদেশকে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হলো। যদিও তারা সফল হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের পতাকা পরিবর্তন করার কথা বলা হলো। চাঁদ-তারা পতাকা চাই বলে ঢাকার রাস্তায় স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ দেশকে আবার পাকিস্তান বানানোর চেষ্ঠা করা হয়েছিল। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে আসলে বাংলাদেশটাকেই হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
মন্ত্রী বলেন, আজকে বেগম খালেদা জিয়া নিজের জন্মদিন পাল্টে ১৫ আগস্ট কেক কাটেন। মানুষের সমালোচনায় পড়ে কেক কাটা বন্ধ করে এখন মিলাদ পড়ান। এই জন্মের তারিখ ওনার বিয়ের রেজিস্ট্রারে ও পাসপোর্টসহ কোথাও নেই। ১৯৯৭ সালে হঠাৎ তিনি ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করলেন। ১৫ আগস্টে কেক কাটার মাধ্যমে তারা স্বীকার করে নিয়েছেন জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু খুনের সঙ্গে জড়িত। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমান যেমন যুক্ত ঠিক ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান যুক্ত।
তিনি বলেন, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সালে মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে, সড়কের পাশে থামানো গাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় চালক ও হেলপারকে জীবন্ত অবস্থায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এখানে সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত আছেন, আমি আপনাদের কাছে জানতে চাই, পৃথিবীর কোন জায়গায় গত দুই-তিন দশকে রাজনীতির জন্য বা রাজনৈতিক অভিলাস চরিতার্থ করার জন্য এ রকম পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে? কোথাও হয়নি, কেউ বলতে পারবেন না। পৃথিবীর কোনো কোনো জায়গায় এ রকম ঘটেছে, যেখানে জাতিগত সংঘাত হচ্ছে, যুদ্ধ হচ্ছে সেখানে।
বিজ্ঞাপন
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের সম্মান করতেন, ভালোবাসতেন। আর জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেন। এই যে সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট করা হয়েছে, এটি তার মাথা থেকে এসেছে। আমাকে এই মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকেই আমি আপনাদের কল্যাণে কাজ করার জন্য সর্বোচ্চ সামর্থ্য কাজে লাগিয়েছি। জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তা নেই জেনেও ভালোবেসে এই পেশায় অনেকে আছেন।
ঝলমলে উচ্চবিলাসী জীবন ছেড়েই আপনারা এই পেশায় আছেন, অথচ চাইলেই আপনারা চাকরির নিশ্চয়তা ও অর্থের নিশ্চয়তা নিতে পারতেন। দেশকে ভালোবাসেন বলেই শত ঝুঁকি নিয়েই এই পেশাতেই রয়ে গেছেন। অনেককেই দেখেছি চাকরিচ্যুত হয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে গেছেন। আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করব, জাতীয় পেনশন স্কিমে সাংবাদিকদের জন্য বিশেষভাবে কিছু করা যায় কি না।
এ সময় ১০ জন সাংবাদিককে মোট ২০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন তথ্যমন্ত্রী।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আমির হোসাইন স্মিথের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, জেলা পরিষদ প্রশাসক আনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কাশেম হুমায়ুন, বিকেএমইর কার্যকরী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ অনেকে।
এসপি